মঙ্গলবার ভোরে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারো ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে নড়েচড়ে উঠেছে বহুতল ভবন থেকে শুরু করে উঁচু স্থাপনা। অল্প সময়ের মধ্যেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, সকাল ৬টা ৪০ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিকটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.১। এটি একটি মাঝারি মানের ভূমিকম্প।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে কয়েক দফা ছোট ছোট ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতেও এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। উৎপত্তিস্থল দূরে হওয়ায় বাংলাদেশে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। তবে, এই পরিস্থিতিতে মানুষের মধ্যে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি ও পূর্বাভাস নিয়ে নতুন করে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ছোট ছোট ভূমিকম্পের পর বড় বিপর্যয়ের আভাস হতে পারে, এবং এ কারণে অবিলম্বে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, বেশ কয়েকটি সক্রিয় ফল্ট লাইনসহ টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষ অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান। এ কারণে বাংলাদেশ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে এই অঞ্চলে বিধ্বংসী ভূমিকম্প ঘটেছে। ১৮৬৯ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে পাঁচটি বড় ভূমিকম্প রিকটার স্কেলে সাতের ওপরে হয়েছিল। এরপর থেকে উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প হয়নি। তবে, ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের আগে এই নীরবতা থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকার অধিকাংশ ভবনই নির্মাণ নীতির বাইরে গড়ে উঠেছে। এ কারণে, একটি বড় ভূমিকম্পে ঢাকাসহ শহরগুলোর অনেক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে। যদিও বাংলাদেশে ভূমিকম্পের তীব্রতা কম অনুভূত হয়েছে, তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলীয় এলাকা এতে নড়ে-চড়ে গেছে।
ভারতের জাতীয় ভূকম্পন পরিমাপ কেন্দ্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে ৬টা ১০ মিনিটে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে ৩৫০ কিমি দক্ষিণে এবং হলদিয়া থেকে ২৮৬ কিমি দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ৯১ কিমি গভীরে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ওই অঞ্চলের কম্পন সেরকম অনুভূত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া, কাথি, দীঘা কেঁপে উঠেছিল। তবে, পশ্চিমবঙ্গেও এখনো কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের পরে সমুদ্রের পরিস্থিতিও জানা যায়নি। গত সপ্তাহে দিল্লি এবং সংলগ্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছিল, যেখানে রিকটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা সিসমিক জোন চার এর মধ্যে পড়ে, যা ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=PugfUpREegg&ab_channel=EkattorTV
Leave a Reply