আল্লাহ তা’লা তাঁর প্রিয় বান্দাদের দশটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন। যারা এই দশটি গুণ ধারণ করেন, তাদের জন্য আল্লাহ তা’লা ক্ষমা এবং মহাপ্রতিদানের ঘোষণা দিয়েছেন। এই দশটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ইসলামের মৌলিক মূল্যবোধগুলো সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, যা আমাদের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সহায়ক।
কী সেসব গুণ যা আল্লাহ তা’লা তাঁর প্রিয় বান্দাদের মধ্যে দেখতে চান?
১. ইন্নাল মুসলিমিনায় মুসলিমাতি:
আল্লাহ তা’লা বলেন, “মুসলিম পুরুষ এবং নারী আমার কাছে প্রিয়।” যারা আল্লাহর আদেশের সামনে নিজেদের সপর্দ করে, তাদের আত্মসমর্পণ আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। এই গুণের অধিকারী মুসলিমরা আল্লাহর ইচ্ছার সামনে তাদের নিজেদের ইচ্ছা বিসর্জন দেয়, যা তাদেরকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা বানিয়ে তোলে।
২. মুমিনিন মুমিনাত:
আল্লাহ তা’লা বলেন, “বিশ্বাসী পুরুষ এবং নারী, আত্মসমর্পণকারী নারী এবং পুরুষ আল্লাহর কাছে প্রিয়।” ঈমান মানে হলো আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস এবং স্বীকৃতি। এই পৃথিবীতে ঈমানদার মানুষের জীবন আল্লাহর করুণায় সুরক্ষিত থাকে এবং কেয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন।
৩. অনুগত বান্দা:
আল্লাহ ত’লা বলেন, “যারা আল্লাহর সামনে নিজেদের আনুগত্যের সর্বোচ্চ নমুনা পেশ করে, তারা আমার কাছে প্রিয়।” আল্লাহর আনুগত্যে যারা অটল থাকে, তাদেরকে আল্লাহ ত’লা পছন্দ করেন এবং তাদের প্রতি বিশেষ স্নেহ প্রদর্শন করেন।
৪. সাদিকিন সাদিকাত – সত্যবাদী নারী ও পুরুষ:
ইসলাম আমাদেরকে মিথ্যা বলার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে, কারণ মিথ্যা সবচেয়ে বড় পাপ। আল্লাহ তা’লা বলেন, “সত্যবাদী নারী ও পুরুষকে আমি ভালোবাসি।” যারা সত্যের পথ অনুসরণ করে, আল্লাহ তাদেরকে সম্মানিত করেন।
৫. সাবিরিন সাবিরাত:
আল্লাহ তা’লা বলেন, “ধৈর্যশীল নারী এবং পুরুষদের আমি ভালোবাসি।” যারা জীবনের প্রতিকূলতায় ধৈর্য ধারণ করে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে অপেক্ষা করেন, তাদের আল্লাহ ত’লা বিশেষভাবে পছন্দ করেন।
৬. আল্লাহর ভয়:
যারা আল্লাহর আদেশ মান্য করতে সর্বদা সতর্ক থাকে এবং তাদের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় থাকে, তারা কখনো পথ ভুলে যান না। আল্লাহ তাদের প্রতি বিশেষ স্নেহ প্রদর্শন করেন।
৭. দানশীল বান্দা:
আল্লাহ তা’লা বলেন, “আমার প্রিয় বান্দা তারা যারা দান করে।” দানশীল নারী এবং পুরুষরা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। যারা সদায় আল্লাহর পথে দান করে, আল্লাহ তাদেরকে বড্ড ভালোবাসেন।
৮. রোজাদারদের প্রীতি:
আল্লাহ তা’লা বলেন, “রোজাদারদের আমি ভালোবাসি।” রোজা রাখা ঈমানদারের জন্য একটি বিশেষ গুণ, এবং আল্লাহ রোজাদারদের প্রতি বিশেষ স্নেহ প্রদর্শন করেন।
৯. হাফেজিনামাল হাফেজাত:
আল্লাহ তা’লা বলেন, “যারা তাদের দৃষ্টির হেফাজত করে এবং লজ্জাস্থান রক্ষা করে, আল্লাহ তাদেরকে পছন্দ করেন।” যারা নিজেদের চরিত্র এবং দৃষ্টি সংযত রাখে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট।
১০. আল্লাহর জিকির:
আল্লাহ তা’লা বলেন, “যারা সময় পেলেই আল্লাহর জিকির করে, তাদের আমি ভালোবাসি।” যারা সজ্ঞানে ও নিয়মিতভাবে আল্লাহর নাম স্মরণ করেন, আল্লাহ তাদেরকে বিশেষভাবে পছন্দ করেন।
এই দশটি বৈশিষ্ট্য আল্লাহ ত’লা অত্যন্ত পছন্দ করেন। ইসলামের মৌলিক অনুষঙ্গগুলো এখানে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। যারা এই গুণগুলো নিজের জীবনে ধারণ করবে, তারা আল্লাহর কাছে প্রিয় বান্দা হিসেবে গণ্য হবে এবং জান্নাতে প্রবেশের পথ পাবেন।
Leave a Reply