কোটা পুনর্বহাল বাতিল আন্দোলনের মূল চেতনার প্রতি অবিচার করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা কলেজের সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাকিব।
তিনি বলেছেন, “কোটা পুনর্বহাল বাতিল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ২০০০ মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং ৩০ হাজারের অধিক আহত হয়েছে, সে কোটা পুনর্বহাল কোনোভাবে মানা যায় না।”
শহীদ পরিবার ও আহতদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য রাষ্ট্রের অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা রাখা হোক। কিন্তু কোটা না।”
সোমবার (৩ মার্চ, ২০২৫) এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “হাসিনা পতনের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতিকে চিরতরে কবর দেওয়া হয়েছে। জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই জয়কে কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ে শহীদ ও আহতদের কোটা সুবিধা দেওয়া, আমাদের জুলাই আন্দোলনের সাথে সাংঘর্ষিক।”
কোটা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে আছি এবং থাকব। কেউ এই আন্দোলনের মূল চেতনা বিকৃত করতে পারবে না।”
প্রসঙ্গত, জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের মাধ্যমে, যা সরকারের দমন-নিপীড়নের ফলে গণমানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। বহু প্রাণের বিনিময়ে দেশের জন্য গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্ব নেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর মধ্যে ঘোষণা এসেছে জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কোটা পাবেন। রবিবার (২ মার্চ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এক আদেশ জারির মাধ্যমে এ কথা জানিয়েছেন। আদেশ বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে স্কুল ও কলেজ অধ্যক্ষদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ দেন মাউশি। ওই অফিস আদেশে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র বা গেজেটের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা মুক্তিযোদ্ধা সনদ বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ শহীদদের গেজেট যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে ওই আসনে ভর্তি করতে হবে। কোনও অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।
Leave a Reply