জুলাই অভ্যুত্থানে আহত একজন ব্যক্তি হিসেবে আমি এই কোটাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি বলে মন্তব্য করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. শাকিল ইসলাম।
এক ফেসবুক পোস্টে শাকিল বলেন, “১৭ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ৮৩ টি গুলি আমার শরীরে এখনো রয়ে গেছে, ডান হাতে নার্ভ ইনজুরি, হাত ঠিকঠাক কাজ করছে না।”
পোস্টে আরও বলেন, “লিখতে না পারায় বন্ধুদের সঙ্গে বসে মাস্টার্স পরীক্ষাটাও দিতে পারলাম না। দেশকে ভালোবাসি, দেশের স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করতেও আমার কোনো দুঃখ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে আহত একজন ব্যক্তি হিসেবে আমি এই কোটাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি।”

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শাকিলসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী হামলার শিকার হয়েছিলেন। এখনো অনেকে সেই ঘটনার শারীরিক ও মানসিক ক্ষত বহন করছেন। শাকিলের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের মাধ্যমে, যা সরকারের দমন-নিপীড়নের ফলে গণমানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। বহু প্রাণের বিনিময়ে দেশের জন্য গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্ব নেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর মধ্যে ঘোষণা এসেছে জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কোটা পাবেন। রবিবার (২ মার্চ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এক আদেশ জারির মাধ্যমে এ কথা জানিয়েছেন। আদেশ বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে স্কুল ও কলেজ অধ্যক্ষদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ দেন মাউশি। ওই অফিস আদেশে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র বা গেজেটের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা মুক্তিযোদ্ধা সনদ বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ শহীদদের গেজেট যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে ওই আসনে ভর্তি করতে হবে। কোনও অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।
Leave a Reply