free tracking

নীরব ঘাতক কিডনীরোগ, ‘এই’ আট লক্ষণ এড়িয়ে গেলেই ঘটবে মারাত্মক বিপদ!

কিডনি সুস্থ রাখা সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে কিডনি পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। শরীরে জমা হওয়া দূষিত পদার্থ ছেঁকে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি, কিডনি শরীরের সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফেটের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনিতে সমস্যা থাকলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রার দিকে নজর দেওয়া উচিত। শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। এ কারণে প্রতিদিন এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত, যাতে ২০০ মিলিগ্রামের কম পটাশিয়াম থাকে।

নারীদের কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি

সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষদের তুলনায় নারীদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে, পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজে (PKD) আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নারীদের মধ্যে বেশি থাকে। তলপেটে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ এবং মূত্রের সঙ্গে রক্তপাত হওয়া কিডনিতে সিস্টের মূল লক্ষণ।

৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে ক্রনিক কিডনি ডিজিজে (CKD) আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি, বিশেষত যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা রয়েছে।

কিডনি বিকল হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ

কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ না করলে রক্ত যথাযথভাবে ফিল্টার করতে পারে না, ফলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে। এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তবে কিডনি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত কোনো উপসর্গ স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি টের পাওয়ার আগেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।

কিডনি বিকল হওয়ার আগেই যে ৮টি লক্ষণ দেখা দিতে পারে:

১. মুখে দুর্গন্ধ, পেট খারাপ, বমি: কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে রক্তে বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়, যা ডাক্তারি ভাষায় ‘ইউরেমিয়া’ নামে পরিচিত। এর ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয়, পেট খারাপ হতে পারে এবং বমি-বমিভাব দেখা দিতে পারে।

২. অতিরিক্ত ক্লান্তি: কিডনি ‘Erythropoietin’ নামক হরমোন তৈরি করে, যা লোহিত রক্তকণিকা (RBC) তৈরিতে সহায়তা করে। কিডনি অসুস্থ হলে এই হরমোনের উৎপাদন কমে যায়, ফলে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

৩. ত্বকের সমস্যা: কিডনি শরীরের লবণ ও প্রয়োজনীয় খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখে। যদি কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়। এমনকি চুলকানি ও ঘায়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৪. শ্বাসকষ্ট: কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে ফুসফুসে অতিরিক্ত তরল জমতে পারে, পাশাপাশি শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে, যা শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।

৫. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া: কিডনি বিকল হলে অ্যানেমিয়া দেখা দিতে পারে, যার ফলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। এতে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায় এবং মনোযোগের ঘাটতি তৈরি হয়।

৬. প্রস্রাবের সমস্যা: বারবার প্রস্রাবের বেগ হওয়া, বিশেষ করে রাতে, কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। প্রস্রাবে রক্ত বা অতিরিক্ত ফেনা থাকলেও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৭. অনিদ্রা: কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য অপসারিত হয় না, যা অনিদ্রার অন্যতম কারণ হতে পারে।

৮. পা ও মুখ ফুলে যাওয়া: কিডনির সমস্যার কারণে রক্তে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, ফলে পা ও গোড়ালি ফুলে যায়। কিডনি দুর্বল হলে শরীরে অতিরিক্ত তরল জমতে পারে, যা মুখ ফুলে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি সুস্থ রাখতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, পরিমিত লবণ গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *