বর্তমানে, ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যকলাপ করার সময় হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অনেকের কাছে আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাদের মধ্যে কেন এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা নিয়ে নানা ধরনের তত্ত্ব উঠে আসছে। আসুন, এই বিষয়টি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করি।
ব্যায়ামের সময় হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ
1. অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ: অনেক সময় ব্যায়াম করার সময় শরীরের সীমা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা হয়। এভাবে শরীরের উপর চাপ পড়লে হৃদযন্ত্রের উপর অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেয়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। বিশেষত যারা দীর্ঘসময় ধরে অব্যয়াম করেন, তাদের মধ্যে এই ঝুঁকি বাড়তে পারে।
2. আগে থেকে স্বাস্থ্য সমস্যার উপস্থিতি: যারা আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের ইতিহাস পেয়ে থাকেন, তাদের জন্য ব্যায়াম করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হঠাৎ করে অতিরিক্ত ব্যায়াম শুরু করা হয়, তবে তা হৃদযন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
3. তীব্র ব্যায়ামের প্রভাব: তীব্র ব্যায়াম, বিশেষত সঠিক প্রস্তুতি ছাড়া হঠাৎ করেই চালানো, হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। শরীরের উত্তেজনা ও অতিরিক্ত অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে হৃদপিণ্ড অতিরিক্ত কাজ করতে শুরু করে, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
4. অপুষ্টি এবং পানি কম খাওয়া: অনেক সময় ব্যায়াম করার সময় শরীরে পানির অভাব এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি না থাকা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে, যদি শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকে বা পুষ্টির ঘাটতি থাকে, তাহলে শারীরিক চাপ সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে।
5. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: ব্যায়ামের সময় মানসিক চাপ বা উদ্বেগের প্রভাবও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত উদ্বেগ বা স্ট্রেস হৃদরোগের সাথে সম্পর্কিত এবং ব্যায়াম করার সময় এই মানসিক অবস্থাও তাৎক্ষণিকভাবে হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
প্রতিরোধ ব্যবস্থা:
প্রথমে ডাক্তারি পরামর্শ নেয়া: যারা পূর্বে হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের ইতিহাস পেয়ে থাকেন, তাদের জন্য ব্যায়াম শুরুর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।
মোডারেট ব্যায়াম: খুব তীব্র ব্যায়ামের পরিবর্তে সঠিক তালে ও পরিমাণে ব্যায়াম করা অনেক বেশি নিরাপদ। নিয়মিত হাঁটা, সাঁতার কাটা বা হালকা যোগব্যায়াম হতে পারে ভাল বিকল্প।
ধীর গতিতে শুরু করা: হঠাৎ করে অধিক তীব্র ব্যায়াম শুরু না করে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো উচিত। এটি শরীরকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
পানি ও পুষ্টি সচেতনতা: ব্যায়াম করার সময় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Leave a Reply