ইরানি প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত নিছক দুর্ঘটনা নাকি ষড়যন্ত্র!

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভিসহ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। কিন্তু কী কারণে এমন মর্মান্তিক পরিণতি হলো হেলিকপ্টারটির? কেন বা কীভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়লো সেটি? এটি কি নিছকই দুর্ঘটনা নাকি, এর পেছনে রয়েছে বিশাল কোনো ষড়যন্ত্র, এখন এসব প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে সবার মনে।

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে এখনো হয়তো বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঘন মেঘ, কুয়াশা ও জলীয় বাষ্পের কারণেই হয়তো এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পল বিভার নামে একজন উড়োজাহাজ বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক হেলিকপ্টার পাইলট বলেছেন, ইরানি প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে ‘অবশ্যই’ মেঘের আচ্ছাদন, কুয়াশা, জলীয় বাষ্প এবং নিম্ন তাপমাত্রা ভূমিকা রেখেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, হেলিকপ্টারগুলো ফিক্সড-উইং প্লেনের মতো বিরূপ আবহাওয়ায় সহজে উড়তে পারে না। হেলিকপ্টারে সেই সুবিধা নেই।

এর আগে, রোববার আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে দুটি বাঁধ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এরপর হেলিকপ্টারে চড়ে ইরানের উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরো বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ছিলেন। তাবরিজ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি।

প্রেসিডেন্টের বহরে মোট তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে অবতরণ করলেও ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। নিরাপদে ফেরা হেলিকপ্টারে ছিলেন ইরানের জ্বালানি মন্ত্রী আলী আকবর মেহরাবিয়ান এবং আবাসন ও পরিবহনমন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ।

প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বেল ২১২ মডেলের একটি হেলিকপ্টার বহন করছিল। এই মডেলটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের হেলিকপ্টার ইরানের কাছে বিক্রি করার কথা নয়। সে হিসাবে, এটি অন্তত ৪৫ বছরের পুরোনো।

সোমবার সকালে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকায় ইরানি প্রেসিন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানী দল। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, সেখানে প্রাণের কোনো চিহ্ন নেই। পুরো হেলিকপ্টার ভস্মীভূত হয়ে গেছে।

ইরানে এর আগেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এ ধরনের আকাশযান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।

সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *