free tracking

স্ত্রী কি তার স্বামীকে জাকাত দিতে পারবেন?

জাকাত ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান এবং পঞ্চস্তম্ভের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষ উপকৃত হয় এবং অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক স্বাধীন, প্রাপ্তবয়স্ক এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক মুসলিম পুরুষ ও নারীর জন্য প্রতিবছর নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা ফরজ। শরিয়ত নির্ধারিত নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক হিজরি বছর ধরে কারো কাছে থাকলে তাকে সম্পদশালী গণ্য করা হয় এবং সে ক্ষেত্রে তার বর্ধনশীল সম্পদের ২.৫ শতাংশ বা ১/৪০ অংশ দান করা বাধ্যতামূলক।

কোরআনে জাকাতের গুরুত্ব

পবিত্র কোরআনে জাকাতের কথা ৩২ বার এসেছে এবং নামাজের পর জাকাতের কথাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে:

“নিশ্চয়ই সদকা (জাকাত) দরিদ্র, অভাবগ্রস্ত, যারা জাকাত সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত, যাদের অন্তর আকৃষ্ট করা প্রয়োজন, দাস মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের সাহায্যে, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য নির্ধারিত। এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত বিধান।” (সুরা তওবা: ৬০)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, জাকাত বিতরণের জন্য নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষ রয়েছেন, যারা প্রকৃতপক্ষে এ সহায়তার উপযুক্ত।

ছয় মাসের শিশু থেকে ৭০ বছরের নারী আজ নিরাপদ না, ৫ আগস্টের পরও নারীরা আজ স্বাধীন হয়নি

ছয় মাসের শিশু থেকে ৭০ বছরের নারী আজ নিরাপদ না, ৫ আগস্টের পরও নারীরা আজ স্বাধীন হয়নি
আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে জাকাত প্রদান

ইসলামে আত্মীয়তার সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তাই দরিদ্র আত্মীয়দের জাকাত প্রদান করাকে অত্যন্ত পুণ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। স্ত্রী যদি সম্পদশালী হন, তবে তার দরিদ্র স্বামীকে জাকাত দেওয়া জায়েজ। একইভাবে এমন আত্মীয়স্বজন, যাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব ব্যক্তির ওপর ফরজ নয়— যেমন চাচা, মামা, খালা, ফুফু, আপন ভাইবোন— তাদেরও জাকাত দেওয়া যেতে পারে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“সাধারণ অভাবীদের সদকা দিলে তা শুধু সদকা হয়, কিন্তু আত্মীয়দের দিলে তা সদকা হওয়ার পাশাপাশি আত্মীয়তার হকও আদায় হয়।” (মুসনাদে আহমাদ: ১৫৭৯৪, সুনানে নাসাঈ: ২৫৮২)

গোপনে জাকাত প্রদান

অনেক সময় অভাবী আত্মীয় বা স্বামী ‘জাকাত’ হিসেবে অর্থ নিতে সংকোচবোধ করতে পারেন। ইসলামে এ বিষয়টিও বিবেচনা করা হয়েছে। তাই তাদের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে জাকাতের অর্থ উপহার বা হাদিয়ার নামে দেওয়া যেতে পারে, যাতে তারা কষ্ট না পান।

জাকাতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব

জাকাত কেবল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি সমাজের আর্থিক ভারসাম্য রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। এটি ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করে এবং দরিদ্রদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করে। একটি সমাজে যদি প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি সঠিকভাবে জাকাত প্রদান করে, তবে দারিদ্র্য বিমোচন সহজতর হবে এবং সামাজিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *