১১৬ রানের টার্গেট দিয়েও শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়লো সিকান্দার রাজার জিম্বাবুয়ে!

পরীক্ষানিরীক্ষা করতে গিয়ে যান খাল কেটে কুমির ডেকে আনলো ভারত। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের জন্য আইপিএলে ভালো করা বেঞ্চের ক্রিকেটারদের নিয়ে স্কোয়াড গঠন করেছিল টিম ইন্ডিয়া। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে ভারতের সেই বেঞ্চ স্কোয়াড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে না পারা জিম্বাবুয়ের কাছে ১৩ রানে হেরে সিরিজ শুরু করেছে মাত্রই বিশ্বকাপ জেতা ভারত।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টসে জিতে আগে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ভারত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার ইনোসেন্ট কাইয়ার উইকেট হারিয়েছে ভারত। গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন কাইয়া।

কাইয়ার বিদায়ের পর টিকে থাকা ওয়েসলি মাদেভেরে এবং তিনে নামা ব্রায়ান বেনেট মিলে প্রতিরোধ গড়েছেন। তবে ভালো শুরু পেলেও বেনেট থেমেছেন দলের ৪০ রানের মাথায়, করেছেন ১৪ বলে ২২ রান। পাওয়ারপ্লে শেষে মাদেভেরে ফিরেছেন ২২ বলে ২১ রান করে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে জিম্বাবুয়ে। ক্রিজে সেট হয়ে দায়িত্ব নিয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তেমন কেউ।

অধিনায়ক সিকান্দার রাজা ১৯ বলে করেছেন ১৭ রান। ডিয়ন মায়ার্স খেলেছেন ২২ বলে ২৩ রানের ইনিংস। একের পর এক উইকেট হারিয়ে একদম খাদের কিনারায় চলে যায় জিম্বাবুয়ে। শেষ উইকেটে দলের হাল ধরেন ক্লিভ মাদান্দে। মূলত তার ব্যাটে চড়েই ১০০ রান পার করে জিম্বাবুয়ে, হয়নি অলআউটও। ২৫ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন মাদান্দে। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তুলে থেমেছে জিম্বাবুয়ে।

ভারতের হয়ে মাত্র ১৩ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেন রবি বিষ্ণই। ২ উইকেট তোলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। ১ উইকেট নেন মুকেশ কুমার।

জবাব দিতে নেমে বেশ চাপে পড়ে যায় ভারত। ওপেনার অভিষেক শর্মা সাজঘরে ফিরেছেন প্রথম ওভারেই। ৪ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন অভিষেক, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি অভিষেক ম্যাচ ছিল তার।

অধিনায়ক শুবমান গিল এক প্রান্তে ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাবলীল ব্যাটিংয়ে। তবে আরেক প্রান্তে ব্যাটাররা যোগ দেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। কেউই ক্রিজে টিকতে পারছিলেন না। তিনে নেমে রুতুরাজ গাইকোয়াদ ফিরেছেন ৯ বলে ৭ রান করে। রিয়ান পরাগও অভিষেকে আলো ছড়াতে পারেননি। ৩ বলে ২ রান করেন পরাগ। রিঙ্কু সিং ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। ২ বল খেলে ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে যান রিঙ্কু। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে মাত্র ২৮ রান তোলে ভারত, উইকেট হারিয়ে ফেলে ৪টি।

তবে গিল যতক্ষণ ক্রিজে টিকে ছিলেন ততক্ষণ যেন আশা টিকে ছিল ভারতেরও। এই সিরিজে ভারতের অধিনায়ক গিল। সেই সাথে লম্বা সময় ধরে দাপট দেখাচ্ছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। তবে দলের ৪৭ রানের মাথায় গিলকে বোল্ড করে দেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা, পতন ঘটে ভারতের ৬ষ্ঠ উইকেটের। আর ম্যাচটাও যেন তখনই হেলে পড়তে শুরু করে জিম্বাবুয়ের দিকে।

শেষ দিকে ক্রিজে টিকে ছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। মাঝে আবেশ খান কিছুটা লড়াইয়ের চেষ্টা চালিয়েছেন। তবে ১২ বলে ১৬ রান করে বিদায় নেন তিনি। সুন্দর লড়াই চালিয়ে গেছেন একদম শেষ পর্যন্ত। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৬ রান দরকার ছিল ভারতের। তবে ভারত ২ রানের বেশি নিতে পারেনি। ১৩ রানের ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে। ৩৪ বলে ২৭ রান করে আউট হন সুন্দর।

জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেন সিকান্দার রাজা এবং টেন্ডাই চাতারা। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন ব্রায়ান বেনেট, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্লেসিং মুজারাবানি এবং লুক জঙ্গুয়ে।

পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *