পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. হেনায়ারা খানমের ঘুষের একাধিক অডিও ভাইরাল হলেও তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষক নেতা, শিক্ষকসহ উপজেলাবাসীর মাঝে এক প্রকার মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষের অডিও বারবার ভাইরাল হচ্ছে। তিনি শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে ঘুষ গ্রহণ করেন।
তার বিরুদ্ধে অশোভন আচারণ ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুই শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক শিক্ষক নেতা জানান, শিক্ষা কর্মকর্তা ঘুষ নেওয়ার জন্য একটি চক্র তৈরি করে রেখেছে। তাদের এই চক্রটির একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে। তারা আগে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এমনটা করে আসছে।
এখন বিএনপি-জামায়াতের নেতা বা তাদের আত্মীয়দের পরিচয়ে আবার চক্রটি মিলে তাদের কাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ সাবেক এক চেয়ারম্যান বলেন, তিনি যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন তার কাছেও কিছু লিখিত অভিযোগ এসেছিল। তাকে (শিক্ষা কর্মকর্তা) বারবার সতর্ক সংকেত দিলেও তিনি একই কাজ করে যেতেন।
ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষক বলেন, তারা ম্যাডাম (শিক্ষা কর্মকর্তা) উপজেলায় আসার পর বিভিন্নভাবে উৎকোচ প্রদান করেছেন।
লোক-লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলেনি। আবার অনেক সময় ওই শিক্ষা কর্মকর্তা হুমকিও দিয়েছে তাদের।
সম্প্রতি বেনজীর আহমেদ নামের এক সহকারী শিক্ষকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষের অডিও ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া অডিওতে শোনা যায়, ওই শিক্ষক কিছু টাকা কম নিতে অনুরোধ করে শিক্ষা কর্মকর্তাকে কিন্তু কম নিতে রাজি নন। ওই শিক্ষক অনুরোধ করে বলেন যে কয় টাকা বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চলে না আপনি কিছু টাকা কম নেনে।
বেনজীর আহমেদ এ ঘটনায় গত ১০ মার্চ এক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
পিরোজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তার অডিও ভাইরালের বিষয়ে আমাদের অধিদপ্তর ও ডিডি অফিসে থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক মিজ নিলুফার ইয়াসমিন জানান, তার ব্যাপারে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তাকে ক্লোজ করার ব্যাপারে জানিয়েছি ঢাকা অফিসে। বিভাগীয় মামলার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
Leave a Reply