বর্তমানে অ্যাজমার জন্য কোনো নির্দিষ্ট ডায়েট নেই। তবে গবেষণা বলছে যে প্রক্রিয়াজাত খাবার কমিয়ে তাজা শাকসবজি ও ফলমূল গ্রহণ করা উপকারী হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
অ্যাজমা একটি দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে তীব্র হতে পারে। যাদের অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে তাদের খাদ্যতালিকার দিকে বিশেষ নজর দিতে হয়। যদিও কোনো নির্দিষ্ট খাবার সরাসরি অ্যাজমা নিরাময় করতে পারে না, তবে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার ফলে অনেক সময় এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় বলছেন চিকিৎসকরা। হেলথলাইনের এক প্রতিবেদনে এমন কিছু খাবারের বিষয়ে চিকিৎসকরা কথা বলেছেন।
অ্যাজমার জন্য সেরা ডায়েট: বর্তমানে অ্যাজমার জন্য কোনো নির্দিষ্ট ডায়েট নেই। তবে গবেষণা বলছে যে প্রক্রিয়াজাত খাবার কমিয়ে তাজা শাকসবজি ও ফলমূল গ্রহণ করা উপকারী হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অ্যাজমার প্রকোপও বেড়েছে।
ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদে পুষ্টিকর খাবার খেলে অ্যাজমার প্রকোপ কমতে পারে।
যে খাবারগুলো খাদ্যতালিকায় রাখা ভালো: অ্যাজমার তীব্রতা কমাতে কিছু নির্দিষ্ট খাবার সহায়ক হতে পারে। যেমন:
ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন সি: ক্যাপসিকাম, কমলা, স্ট্রবেরি, ব্রোকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, আপেল।
ভিটামিন ই: সূর্যমুখী বীজ, বাদাম, অ্যাভোকাডো, চিনাবাদাম।
ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন: গাজর, ক্যান্টালোপ, মিষ্টিআলু, পালং শাক, ব্রোকলি।
ভিটামিন ডি: সালমন মাছ, ডিম, ফোর্টিফায়েড দুধ ও কমলার রস।
খনিজ সমৃদ্ধ খাবার
সেলেনিয়াম: ব্রাজিল বাদাম, মাছ, মাংস, ডিম, বাদাম, ব্রাউন রাইস।
ম্যাগনেশিয়াম: ডার্ক চকলেট, অ্যাভোকাডো, টফু, কুমড়ার বীজ, সুইস চার্ড।
যে খাবার বাদ দিতে হবে: কিছু খাবার অ্যাজমার উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই যদের অ্যাজমার সমস্যা তাদের এসব খাবার না খাওয়াই ভালো।
সালফাইটযুক্ত খাবার: ওয়াইন, শুকনো ফল, আচার, বোতলজাত লেবুর রস।
গ্যাস সৃষ্টিকারী খাবার: বিট, বাঁধাকপি, কার্বনেটেড ড্রিংক, পেঁয়াজ, রসুন, ভাজাপোড়া খাবার।
সালিসাইলেট সংবেদনশীলতা: কফি, চা, কিছু মশলা ও ভেষজ উপাদান।
কৃত্রিম উপাদানসমৃদ্ধ খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড।
অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবার: দুধ, গম, সামুদ্রিক মাছ, বাদাম।
অ্যাজমা ও স্থূলতা: স্থূলতা অ্যাজমার একটি বড় ঝুঁকি কারণ এটি শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করলে অ্যাজমার উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হতে পারে। তবে অ্যাজমা থাকলে ব্যায়াম করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো।
অ্যাজমার জন্য নির্দিষ্ট কোনো খাদ্য পরিকল্পনা না থাকলেও স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করলে উপসর্গ কিছুটা কমানো যেতে পারে। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি খাবার যেমন শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া এবং প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্ট ফুড পরিহার করাই হলো সেরা উপায়। আপনার খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত এবং নির্ধারিত ওষুধ বন্ধ করা যাবে না।
Leave a Reply