সান ফ্রান্সিসকোর গবেষকরা ১৮টি গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখেছেন, পর্যাপ্ত পানি পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে। ছবি: সংগৃহীত
পানি আমাদের শরীরের অপরিহার্য উপাদান। শরীরে পানির অভাব হলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষত, কিডনির সঠিক কার্যকারিতায় পানির ভূমিকা নিয়ে নানা গবেষণা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ফ্রান্সিসকোর গবেষকরা ১৮টি গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখেছেন, পর্যাপ্ত পানি পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা উঠে এসেছে।
একাধিক গবেষণার ভিত্তিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন অন্তত আট কাপ পানি পান করলে কিডনি স্টোনের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। এ বিষয়ে গবেষণার তথ্য প্রকাশ করেছে ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’। গবেষণা দলের প্রধান, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের প্রধান বেনজামিন ব্রেয়ার জানান, পানি কিডনির পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজেও সহায়ক। যথাযথ পানিপান ওজন কমানো, মাথাব্যথা নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
গবেষণার ফল: গবেষণাটি থেকে যেসব বিষয় উঠে এসেছে সেটা বলতে গিয়ে বেনজামিন ব্রেয়ার বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেন। যেগুলো হলো:-
খাবারের আগে পানি পান করার সত্যি দারুণ উপকারী। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এটা বেশ কাজে আসে। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য খাবার আগে পানি খাওয়ার গুরুত্ব সেটা গবেষণাটিতে উঠে এসেছে।
গবেষণা বলছে, প্রাপ্তবয়স্করা, যারা ঘন ঘন মাথাব্যথার ভোগেন। তাদের একটানা তিন মাস পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। এতে তারা বেশ আরাম পাবেন। অনেক সময় কম পানি পানের জন্য মাথা ব্যথার সমস্যা হয়।
এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে, আট সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন চার কাপ বেশি পানি পান করার ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্বাসে ভাঙন ধরলেই কি সম্পর্ক শেষ, জানুন মনোবিদের পরামর্শ
পর্যাপ্ত পানি খেলে কিডনির পাথর প্রতিরোধ করা সম্ভব। স্বল্প পানি খেলে অনেক সময় কিডনিতে পাথর হয়। তাছাড়া, যারা ঘন ঘন মূত্রনালীর সংক্রমণের শিকার, তারা প্রতিদিন অতিরিক্ত ছয় কাপ পানি পান করার ফলে দীর্ঘমেয়াদে সংক্রমণের থেকে রক্ষা পাবেন।
নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় ভোগা তরুণরাও পানি পান করার উপকার পেয়েছেন।
তবে গবেষকরা সতর্ক করেছেন, পানি পান করার মাত্রা সবার জন্য একই হওয়া উচিত নয়। ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ও প্রয়োজন অনুযায়ী পানি গ্রহণের পরিমাণ নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, যাদের কিডনির সমস্যা বা মূত্রনালীর সংক্রমণের ইতিহাস আছে, তাদের পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করা জরুরি।
Leave a Reply