free tracking

আপনারও হতে পারে হার্ট অ্যাটাক, গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা ভেবে ভুল করবেন না!

তামিম ইকবালের বয়স খুব বেশি নয়। এই তো ক’দিন আগে ৩৭ বছরে পা রেখেছেন। কিন্তু এই বয়সেই হৃদরোগে আক্রান্ত হলেন। আজ (সোমবার) সকালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) ম্যাচে মাঠে নামার আগে বুকে ব্যথা অনুভব করেন তামিম। শুরুতে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা মনে করে ওষুধ সেবন করেছিলেন।

কিন্তু তাতে ব্যথা উপশম হয়নি। উল্টো পরিস্থিতি বেগতিক হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা নয়, অল্প সময়ের ব্যবধানে তার দু’বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হার্টে ব্লক ধরা পড়ার পর চিকিৎসকরা দ্রুত সেখানে রিং পরান। এখন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাকে। একদিনের মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করছেন বিসিবি চিকিৎসক।

চিকিৎকরা বলছেন, যাদের বয়স ত্রিশের আশপাশে, তারা অনেক সময়ই হৃদরোগের লক্ষণকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা ভেবে ভুল করেন। এতে অনেকেই অল্প বয়সেই অনেকে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হচ্ছেন।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, তরুণ বয়সে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কতগুলো স্পষ্ট কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন একটি বড় কারণ। পাশাপাশি কিছু স্বাস্থ্যগত জটিলতাও হৃদরোগের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।

যাদের বয়স ত্রিশের আশপাশে, তারাও যেসব কারণে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হতে পারেন–

বংশগত: মা–বাবা, ভাই-বোন ও আত্মীয়স্বজনের হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব ইতিহাস থাকলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে অধিকতর সচেতনতা জরুরি।

ডায়াবেটিস: আপনার বয়স কত কম বা বেশি, সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে আপনি অন্যদের চেয়ে দুই থেকে চার গুণ বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।

অতিরিক্ত ওজন: অনেক তরুণই আজকাল এ সমস্যায় ভুগছেন। অতিরিক্ত শারীরিক ওজন ও স্থূলতা নানা রকম স্বাস্থ্যগত জটিলতা তৈরি করে, যা একপর্যায়ে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

উচ্চ রক্তচাপ: যেকোনো ধরনের হৃদ্‌রোগের অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। তরুণদের ভেতর হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা। উচ্চ রক্তচাপ হৃৎপিণ্ডের পেশিকে ঘন করে দেয় এবং রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।

ধূমপান ও ভেপিং: ধূমপান হার্ট অ্যাটাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তরুণদের ভেতর ধূমপানের প্রবণতা বেশি। স্বাভাবিকভাবেই একজন অধূমপায়ীর চেয়ে ধূমপায়ীর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেশি। অনেকে আবার সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ভেপ নিয়ে থাকেন। ভেপ বা ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিন ও অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ হৃদ্ গতি বাড়িয়ে দেয়। উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা আছে। ফলে ভেপ গ্রহণকারীও হতে পারেন হার্ট অ্যাটাকের শিকার।

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: এটি তরুণদের ভেতর প্রবলভাবে দেখা যায়। খাবারে অনিয়ম, ঠিকমতো না ঘুমানো, টানা পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, হতাশা, মাদকাসক্তি ইত্যাদি কারণে অল্প বয়সেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *