free tracking

যেসব খাবার খেলেই মস্তিষ্কের ভয়াবহ ক্ষতি, বিপদ এড়াতে যা করবেন!

আমরা সবাই চাই আমাদের মস্তিষ্ক সুস্থ ও তরতাজা থাকুক। বেরি, বাদাম, আর স্যামন মাছ খাওয়া মস্তিষ্কের জন্য ভালো, এটা আমরা জানি। কিন্তু কিছু খাবার আছে যেগুলো  মেজাজ ও স্মৃতিশক্তির উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে বয়স বাড়ার সঙ্গে। গবেষণায় এমন কিছু খাবারের নাম উঠে এসেছে। ওয়েবএমডিতে এই খাবারগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন জেনে নিই কোন খাবারগুলো কম খাওয়া উচিত বা একেবারেই বাদ দেয়া দরকার।

মার্জারিন ও কেকের ফ্রস্টিং: এইসব খাবারে সাধারণত ট্রান্স ফ্যাট বেশি থাকে। ট্রান্স ফ্যাট হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হলেও, মস্তিষ্কের জন্যও মারাত্মক হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষের রক্তে এই ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ বেশি, তাদের ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেকগুণ বেশি।

অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়: বর্তমানে অনেকেই চিনিযুক্ত পানীয় যেমন—সোডা, মিষ্টি চা বা ফ্লেভারড জুস খান। এইসব পানীয়তে থাকা ফ্রুক্টোজ মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা প্রতিদিন নিয়মিত এ ধরনের পানীয় পান করেন, তাদের স্মৃতিশক্তি অনেক দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে।

বর্তমানে অনেকেই চিনিযুক্ত পানীয় যেমন—সোডা, মিষ্টি চা বা ফ্লেভারড জুস খান। এইসব পানীয়তে থাকা ফ্রুক্টোজ মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে অনেকেই চিনিযুক্ত পানীয় যেমন—সোডা, মিষ্টি চা বা ফ্লেভারড জুস খান। এইসব পানীয়তে থাকা ফ্রুক্টোজ মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা পানীয়: চিনি এড়াতে অনেকেই কৃত্রিম চিনিতে ভরসা রাখেন। এ কারণে অনেকেই ডায়েট কোলা বা চিনিমুক্ত জুস খান। অনেকে ভাবেন এগুলো স্বাস্থ্যকর, কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত এ ধরনের পানীয় পান করেন, তাদের মধ্যে স্ট্রোক ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি তিনগুণ বেশি।

ভাজা খাবার: ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই ইত্যাদি শুধু শরীরেই নয়, মস্তিষ্কেও প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই প্রদাহ রক্তনালির স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে এবং মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দেয়, ফলে স্মৃতি ও চিন্তাশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

সাদা পাউরুটি ও সাদা চাল: রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট শরীরে দ্রুত শর্করা বৃদ্ধি করে, পরে হঠাৎ করে সেই শর্করা কমে গেলে মাথা ঘোরা, মনোযোগ হারানো ও মানসিক বিভ্রান্তি দেখা দেয়। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, এই ধরনের খাবার নিয়মিত খেলে আলঝেইমার রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ডোনাট: সহজ নাশতা হিসেবে ডোনাট খান অনেকেই। এটা এমন একটি খাবার যা একই সঙ্গে ভাজা, চিনি-সমৃদ্ধ এবং ট্রান্স ফ্যাটে পূর্ণ। এটি মস্তিষ্কে দ্বিগুণ ক্ষতি করে—প্রদাহ বাড়ায় এবং দীর্ঘমেয়াদে স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল করে ফেলে।

সহজ নাশতা হিসেবে ডোনাট খান অনেকেই। এটা এমন একটি খাবার যা একই সঙ্গে ভাজা, চিনি-সমৃদ্ধ এবং ট্রান্স ফ্যাটে পূর্ণ।

সহজ নাশতা হিসেবে ডোনাট খান অনেকেই। এটা এমন একটি খাবার যা একই সঙ্গে ভাজা, চিনি-সমৃদ্ধ এবং ট্রান্স ফ্যাটে পূর্ণ।

রেড মিট: স্তন্যপায়ী প্রাণীর মাংস রেড মিট হিসেবে বিবেচিত। যেমন গরু, খাসি, মহিষ, ভেড়া ইত্যাদি। রেড মিট থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে সুস্থ থাকতে রেড মিট কম খাওয়া উচিত। চিকিৎসকরা রেড মিটের পরিবর্তে মাছ, মুরগি ও ডালজাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

মাখন ও ফুল-ফ্যাট চিজ: এইসব দুগ্ধজাত পণ্যে বেশি মাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তির জন্য মারাত্মক হতে পারে। মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে লো-ফ্যাট দুধ, দই ও ছানা বেছে নেওয়াই ভালো।

সোর্ডফিশ ও আহি টুনা: এই বড় মাসগুলোতে পারদের পরিমাণ বেশি, যা মস্তিষ্কের নিউরোন নষ্ট করতে পারে। এর পরিবর্তে সালমন, সারডিন বা ম্যাকেরেলের মতো ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ মাছ খাওয়া ভালো।

মাখন ও ফুল-ফ্যাট চিজে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তির জন্য মারাত্মক হতে পারে।

মাখন ও ফুল-ফ্যাট চিজে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তির জন্য মারাত্মক হতে পারে।

অ্যালকোহল: অ্যালকোহল সেবন মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে নতুন তথ্য গ্রহণের ক্ষমতা কমে যেতে পারে, স্মৃতিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে, এমনকি মানসিক অবসাদ বা বিভ্রান্তিরও সৃষ্টি হয়।

বোতলজাত সালাদ ড্রেসিং, মেরিনেড ও সিরাপ: কম-বেশি সব বাসাতেই এখন বোতলজাত সালাদ ড্রেসিং, মেরিনেড থাকে। অনেকে আবার কাজের ঝামেলা কমাতে বিভিন্ন ফলের সিরাপও রাখেন। এইসব বোতলজাত পণ্যে থাকে হাই-ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ, যা স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ কমিয়ে দিতে পারে। এটি সোডার মতোই ক্ষতিকর। তাই সালাদ ড্রেসিং বা মেরিনেড নিজেই তৈরি করতে পারেন।

মস্তিষ্ক আমাদের শরীরের সবচেয়ে জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আপনার মস্তিষ্কের সুস্থতা নির্ভর করে আপনি কী খান তার উপর। তাই চেষ্টা করুন স্বাস্থ্যকর, কম চর্বি ও প্রাকৃতিক খাবার খেতে এবং এই ক্ষতিকর খাবারগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *