জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত। বৃহস্পতিবার তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে আকাশসীমা বন্ধসহ আটটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।
আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় এখন থেকে ভারতের মালিকানাধীন বা ভারত নিয়ন্ত্রিত কোনো বিমান পাকিস্তানের ওপর দিয়ে যেতে পারবে না। বিমান চলাচলের জন্য পাকিস্তানের আকাশ ভারতকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। এর ফলে ভারতের বিমান চলাচলে বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে। বাড়তে পারে বিমানভাড়া।
ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দিল্লিসহ উত্তর ভারতের যেকোনো শহর থেকে পশ্চিমের কোনো দেশে যেতে পাকিস্তানের আকাশ ব্যবহার করা হয়। ওই পথে আন্তর্জাতিক বিমান চালায় এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস এবং স্পাইস জেটের মতো সংস্থা।
পাকিস্তান বৃহস্পতিবার আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই এই সংস্থাগুলো ভবিষ্যতের সমস্যার কথা জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করতে না পারলে উত্তর আমেরিকা, ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং পশ্চিম এশিয়ার দিকে বিমান চালাতে সমস্যা হবে। বিকল্প পথে যাত্রার সময়ও হবে দীর্ঘ।
পাকিস্তানের ওপর দিয়ে না গেলে উত্তর ভারত থেকে পশ্চিমের দিকে বিমানগুলোকে যেতে হবে আরব সাগরের ওপর দিয়ে।এটিই প্রধান বিকল্প পথ। তবে এ ছাড়া কয়েকটি বিকল্প খোলা থাকবে ভারতীয় সংস্থাগুলোর সামনে।
এক সিনিয়র পাইলট সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, আমেরিকা এবং ইউরোপের বিমানগুলো বিকল্প পথ ধরলে গন্তব্যে পৌঁছতে স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা বেশি সময় লাগবে। তবে বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন রকম বিকল্প পথ খুঁজে নিতে পারে। এসংক্রান্ত তালিকা প্রকাশ করা হলেই যাত্রার সময় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে।
আরব সাগর দিয়ে ঘুরে যেতে হলে বাড়তি জ্বালানি খরচ হবে বিমানগুলোর। এর ফলে যাত্রার খরচও আগের চেয়ে বেড়ে যাবে। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে বিমানভাড়া ৮ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে চলেছে। এই পরিস্থিতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে আগামী দিনে ভাড়া আরো বাড়তে পারে।
তবে সমস্যা এখানেই শেষ নয়। বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে হলে বিমানগুলোতে আরো বেশি জ্বালানি রাখতে হবে। তার ফলে সার্বিকভাবে বিমানের ভারসাম্য বজায় রাখতে যাত্রীসংখ্যা, নয়তো জিনিসপত্রের ওজন কমাতে হবে। যাত্রীসংখ্যা কমিয়ে দিতে হলে বিমানসংস্থাগুলোর আয় কমবে। ফলে সেগুলো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে।
এর আগে ২০১৯ সালেও বালাকোটে ভারতের বিমান হামলার পর পাকিস্তান কয়েক মাসের জন্য আকাশসীমা বন্ধ রেখেছিল। পরে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছিল।
Leave a Reply