ভারতশাসিত কাশ্মীরে পর্যটক হত্যা নিয়ে নয়াদিল্লির অভিযোগের পর একটি ‘নিরপেক্ষ’ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটি জানিয়েছে, তারা তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
ভারত দাবি করেছে, হামলায় সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তির মধ্যে দুজন পাকিস্তানের নাগরিক। তবে ইসলামাবাদ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গত মঙ্গলবারের (২২ এপ্রিল) হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন।
শনিবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি বলেন, সত্য উদঘাটন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পাকিস্তান যে কোনো নিরপেক্ষ তদন্তকারীর সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মেনে চলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস করবে না।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেন, পহেলগামে সাম্প্রতিক ট্র্যাজেডি আবারও এই চিরাচরিত দোষারোপের খেলা দেখালো, যার অবসান হওয়া প্রয়োজন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা দিয়েছেন, হামলাকারীদের ‘পৃথিবীর শেষপ্রান্ত পর্যন্ত’ অনুসরণ করা হবে এবং যারা হামলা চালিয়েছে ও পরিকল্পনা করেছে, তাদের ‘কল্পনার অতীত’ শাস্তি দেওয়া হবে।
এই ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও নাগরিকদের মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক প্রতিশোধের দাবি জোরালো হচ্ছে।
হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পাকিস্তান ভারতীয় প্লেনগুলোর জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে।
এছাড়া, উভয় পক্ষের মধ্যে অন্তত দুদিন নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলিবিনিময় হয়েছে। চার বছরের শান্তির পর সেখানে ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একাধিক পোস্ট থেকে ‘অকারণে’ ছোট অস্ত্রের গুলি চালানো হয়। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, কাশ্মীরে অভিযুক্তদের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। কমপক্ষে পাঁচ সন্দেহভাজন বিদ্রোহীর বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা। ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ বড় পরিসরের সামরিক ও নিরাপত্তা অভিযানগুলোর সরাসরি সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply