একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ‘ক্ষমা চাওয়া’ নিয়ে দেওয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই শিবির ও বামপন্থীদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
গত শনিবার (১০ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম লেখেন, “৭১-এর প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে। পাকিস্তান এই দেশে গণহত্যা চালিয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “পাকিস্তান অফিসিয়ালি ক্ষমা চাইলেও, যুদ্ধাপরাধের সহযোগীরা এখনো ক্ষমা চায়নি। ইনিয়ে বিনিয়ে গণহত্যার পক্ষে বয়ান দেওয়া বন্ধ করতে হবে।”
স্ট্যাটাসে ‘মুজিববাদী বাম’ দলগুলোকেও সরাসরি আক্রমণ করে তিনি লেখেন, “লীগের গুম-খুন, শাপলা ও মোদীবিরোধী আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞের মূল পরিকল্পনাকারী এরা। তারা ‘জুলাইয়ের শক্তির’ হয়ে কাজ করে, চক্রান্ত করে এবং দালালি করেও বহাল তবিয়তে আছে।”
এই স্ট্যাটাস সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়। এক পক্ষ যেখানে মাহফুজের বক্তব্যকে স্বাগত জানায়, সেখানে অপর পক্ষ তাকে অতীত সম্পর্ক ও বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের মুখে ফেলে। অনেকেই ফেসবুকে তার মাদ্রাসা জীবনের ছবি শেয়ার করে দাবি করেন, তিনি একসময় শিবিরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
এসব বিতর্কের পরদিন, রোববার (১১ মে) সন্ধ্যায় মাহফুজ আরেকটি স্ট্যাটাস দেন, যেটি কিছুক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে নেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি কড়া ভাষায় লেখেন, “আমাকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। যারা যুদ্ধাপরাধীদের উত্তরসূরি, তারা বেশিই ভুগবে। যারা পাকিস্তানপন্থা বজায় রেখে সরকারে ও সমাজে পদ বাগিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান পরিষ্কার।”
তিনি আরও লেখেন, “যারা গালাগালির সীমা জানে না, তাদের আমি সহ-নাগরিক মনে করি না। পাকিস্তানপন্থিরা যেখানেই থাকবে, সেখানেই প্রতিরোধ হবে।”
এই পাল্টা স্ট্যাটাস ঘিরেও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হয়। প্রথম স্ট্যাটাসে অনেকেই মাহফুজের অবস্থানকে সমর্থন করলেও, দ্বিতীয় স্ট্যাটাসের ভাষা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান অনেকেই। কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে এমন আক্রমণাত্মক ও বিভাজনমূলক বক্তব্য দায়িত্বশীল পদমর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং তা শপথ ভঙ্গের শামিল হতে পারে।
Leave a Reply