free tracking

মালয়েশিয়ার অবৈধ শ্রমিকদের নিয়ে যে ঘোষণা দিলো দূতাবাস!

বৈধ উপায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে প্রতিনিয়ত দালালদের প্রলোভনে পড়ে টুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছেন হাজারো বাংলাদেশি। এতে একদিকে তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে মানবেতর অবস্থায় পড়ছেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে আটক হয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস ৩১৬ ফ্লাইটে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৪০ বাংলাদেশিকে, যারা সবাই টুরিস্ট ভিসায় দেশটিতে ঢুকে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিলেন।

ফেরত আসা যাত্রীদের একজন হেলেনা বেগম জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরতে স্থানীয় দালালের প্ররোচনায় তিন লাখ টাকার বেশি খরচ করে মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে পৌঁছানোর পর ইমিগ্রেশন পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে আটক করা হয় এবং তিন দিন পর ফেরত পাঠানো হয়। একই বিমানে থাকা ইলিয়াস হোসেন ও রবিউল হোসেন জানান, দালালদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী সহায়তা না পেয়ে তারা দীর্ঘ সময় বিমানবন্দরে কষ্টে কাটান, কেউ কেউ খাবার বা পানিও পাননি।

মালয়েশিয়ার একেপিএস (সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ সংস্থা) জানিয়েছে, টুরিস্ট ভিসায় এসে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকা ও সন্দেহজনক আচরণের কারণে সম্প্রতি ১১২ জন বিদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি ছিল, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি। আটক ব্যক্তিরা মূলত বিমানবন্দরে ঘোরাফেরা করছিলেন এবং কাউকে অনুসরণ করছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেক শ্রমিকই অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন এবং ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ক্যাম্পে আটকা পড়েন। দূতাবাসের কাছে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত কয়েক হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক বর্তমানে আটক বা অভিবাসী ক্যাম্পে রয়েছেন। তারা নানা চ্যালেঞ্জ ও দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

বায়রার কিছু বহিষ্কৃত নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা দালালদের মাধ্যমে শ্রমিকদের টুরিস্ট ভিসায় পাঠিয়ে প্রতারণা করছেন। ফকরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি এবং আফিয়া ওভারসিজের আলতাব খানের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ রয়েছে। আলতাব ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তারও হয়েছেন। এছাড়া সমুদ্রপথে কক্সবাজার, টেকনাফ বা পটুয়াখালী থেকেও অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, বৈধভাবে শ্রমিক পাঠানো সহজ ও কার্যকর হলে এসব অবৈধ প্রবণতা কমে আসবে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন অবৈধ উপায়ে শ্রমিক পাঠানো বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পাশাপাশি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার যথাযথভাবে উন্মুক্ত করা জরুরি, যাতে প্রবাসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষা পায় এবং শ্রমিকরা নিরাপদে জীবন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ পান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *