ঘূর্ণিঝড়: বাংলাদেশের মে মাসে ঝুঁকি কতটা?
মে মাস সাধারণত ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে পরিচিত। গত বছরের এই সময়ে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল দেশের উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। এবারও আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে, যার কারণে সৃষ্ট হতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সমুদ্রের অবস্থান এবং সতর্কতা
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি আগামী ২৭ মে পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য উপযোগী রয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় “শক্তি” নামে পরিচিত হতে পারে, নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।
বৃষ্টিপাত এবং জনজীবনে প্রভাব
দেশের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকায় আজকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ।
বৃষ্টিপাত এবং ঝোড়ো হাওয়ার কারণে নাগরিক জীবনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটতে পারে। এর ফলে বিশেষ করে কৃষি, পরিবহন এবং জেলে সম্প্রদায়কে সতর্ক থাকতে হবে।
কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
- আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা নিয়মিত অনুসরণ করুন
- সমুদ্রগামী নৌযান আপাতত নিরাপদ স্থানে রাখা উচিত
- জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিন
এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দ্রুত ও সঠিক তথ্য পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেট পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটে চোখ রাখুন।
এখন সময় সতর্ক থাকার। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থাকলেও সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
❓ প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
ঘূর্ণিঝড় কী?
ঘূর্ণিঝড় হলো একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতার কারণে সৃষ্ট হয় এবং এটি প্রচণ্ড বেগে বাতাস ও বৃষ্টিপাত নিয়ে আসে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় কী করণীয়?
ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া, খাদ্য ও পানি মজুদ রাখা এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা উচিত।
মে মাসে কেন বেশি ঘূর্ণিঝড় হয়?
মে মাসে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা বাড়ে, যা নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টিতে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম কীভাবে হয়?
ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণ করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ও সদস্য দেশগুলো একত্রে একটি তালিকা থেকে।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল কোনটি?
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর বর্তমানে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মৌসুমি বায়ুর আগমনে কী পরিবর্তন হয়?
মৌসুমি বায়ুর আগমনে দেশে বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা কৃষির জন্য ইতিবাচক হলেও নগর জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে থাকে?
সরকার সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিলে উপকূলীয় এলাকা থেকে মানুষ সরিয়ে নেয় এবং জরুরি সেবা প্রস্তুত রাখে।
Leave a Reply