অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুজব যেভাবে ছড়ালো, তা অনুসন্ধান করে শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট।
তাদের অনুসন্ধানে শনাক্ত হয় যে, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মূলধারার গণমাধ্যম ‘দ্য ডেইলি স্টারে’ প্রকাশিত ‘Prof Yunus resigns’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের লিংক প্রচার হতে দেখেছে বাংলাফ্যাক্ট।
তাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, আলোচিত প্রতিবেদনটি আজকের নয় বরং এটি ২০১১ সালের ১৩ মে ‘দ্য ডেইলি স্টারে’ প্রকাশিত প্রতিবেদন। সেসময় প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। ওই প্রতিবেদনের লিংকই গতকালের এ সংবাদ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে।’
যেভাবে গুজবটি ছড়ালো তা অনুসন্ধান করে বাংলাফ্যাক্ট জানায়, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেসবুকে ‘ÔThe Delhi StarÕ’ নামের একটি সার্কাজম পেজ থেকে আলোচিত এই প্রতিবেদনের লিংক শেয়ার করা হয়। পরবর্তীতে নেটিজেনরা যাচাই-বাছাই না করেই এবং ওই পেজকে ‘দ্য ডেইলি স্টারের’ আসল পেজ মনে করে সংবাদটি শেয়ার করতে থাকেন। নেটিজেনদের ধারণা, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এভাবেই গুজবটি দ্রুত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।’
‘ÔThe Delhi StarÕ’ নামের পেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, ‘আলোচিত পেজটিতে ৭২ হাজার ফলোয়ার রয়েছে বর্তমানে। বাংলাফ্যাক্ট উক্ত পেজের ট্র্যান্সপারেন্সি সেকশন পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, এটি ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর চালু করা হয়েছিল এবং এটি চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এর নাম পরিবর্তন করা হয়নি।’
পেজটি বর্তমানে চারজন অ্যাডমিন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, যাদের সবার লোকেশন বাংলাদেশে। অর্থাৎ, অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এই পেজটি চালু করা হয় এবং এটি বাংলাদেশে বসেই পরিচালনা করা হচ্ছে।’
বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, ‘পেজটির সাম্প্রতিক বেশকিছু পোস্ট পর্যবেক্ষণ করেছে বাংলাফ্যাক্ট। এতে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর ইস্যুতে এই পেইজ থেকে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করা হয়। পোস্টগুলো সার্কাজম আকারে দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তা সিরিয়াস দাবি হিসেবে প্রচার হতে দেখেছে বাংলাফ্যাক্ট।’
‘তাছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারের নাম ও ডিজাইন নকল করে পরিচালিত এই পেইজ থেকে প্রায়ই বিভিন্ন ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়, যার ডিজাইনও হুবহু ওই গণমাধ্যমটির মতোই। এতে বিভিন্ন সময়ে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’
Leave a Reply