যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আমদানি শুল্কের সিদ্ধান্ত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল অর্থনীতি— এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আংকটাড)। এ নীতির প্রভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে বড় ধরনের ধস নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে।DSE stock quotes
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি যেসব পণ্যে শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় রকমের ধাক্কা দিতে পারে বলে জানিয়েছে আংকটাড। গত ২৩ মে প্রকাশিত ‘Sparing the Vulnerable: The Cost of New Tariff Burdens’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য এই শুল্ক ব্যবস্থা মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।
যদিও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মোট বাণিজ্য ঘাটতির মাত্র ০.৩% এর জন্য দায়ী, তথাপি রপ্তানিকারকদের এখন থেকে মার্কিন বাজারে প্রবেশ করতে হলে অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুরুর দিকে ১০% সাধারণ শুল্ক আরোপ করা হলেও, জুলাই থেকে দেশভিত্তিক অতিরিক্ত শুল্ক চালু হলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা বেড়ে ৪৪% পর্যন্ত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য ও অন্যান্য রপ্তানি খাতকে প্রচণ্ড চাপে ফেলবে।
আংকটাড-এর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ শুধু বাণিজ্যিক নয়, এটি বৈষম্যমূলকও। তারা বলছে, বিশ্ববাজারে ন্যায্য প্রবেশাধিকার নিশ্চিত না হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি আরও পেছনে পড়বে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন ধরণের বৈষম্য তৈরি হয়ে বৈশ্বিক উন্নয়ন থমকে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
এই সংকটে বাংলাদেশও বসে নেই। সরকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য রক্ষা ও সম্প্রসারণে সক্রিয় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বাজেট প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ১০০টি পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যাতে সম্পর্ক মজবুত হয় এবং মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘‘এটি এক ধরনের ‘শাস্তিমূলক শুল্কনীতি’। আন্তর্জাতিকভাবে বাণিজ্য সহযোগিতা ছাড়া এ বিপর্যয় সামাল দেওয়া কঠিন হবে।’’ তারা আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য বিকল্প বাজার খোঁজা, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ ও ট্যারিফ-কূটনীতি এখন অত্যন্ত জরুরি।’’
Leave a Reply