যে দিনটি ভুলে যেতে চাইবে আর্জেন্টিনা!

মারাকানায় পেনাল্টি শুটআউটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময় শেষ, অতিরিক্ত সময়েরও বাকি মাত্র ৭ মিনিট। কিন্তু ১১৩ মিনিটে হঠাৎ আলবিসেলেস্তেদের স্তব্ধ করে দিলেন শেষ মুহূর্তে খেলতে নামা ২২ বছর তরুণ মারিও গোটজে। সতীর্থের ক্রস বুকে নিয়ে দারুণ এক ভলিতে জার্মানিকে এনে দিলেন ঐতিহাসিক জয়। আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়দের সঙ্গে চোখের পানিতে সেদিন মারাকানা স্টেডিয়ামের আকাশ-বাতাস ভারী করে তুলেছিলেন উপস্থিত সমর্থকরা। হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখা আলবিসেলেস্তে সমর্থকদের।

১০ বছর আগের আজকের এই দিনে (১৩ জুলাই) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের ঘরের মাঠে ১-০ গোলে জার্মানির কাছে ফাইনালে হেরে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। আর ২২ বছর বয়সী মারিও গোটজে নাম লিখিয়েছিলেন ইতিহাসের পাতায়। ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে তার অতিরিক্ত সময়ের জয়সূচক গোলটির কথা মনে পড়লে এখনো হৃদয়ক্ষরণ হয় আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। অন্যদিকে চতুর্থবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মর্যাদা এনে দেওয়ার জন্য সব সময় জার্মানদের হৃদয়ে থাকবেন গোটজে।

জার্মানরা শেষবার বিশ্বকাপ ট্রফি তুলেছিল ১৯৯০ সালে, যখন তারা ইতালির রোমে একই ব্যাবধানে দিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল। ২০১৪ সালের ফাইনালে মিরোস্লাভ ক্লোসের বদলি হিসেবে ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে মাঠে নামেন মারিও গোটজে।

সন্দেহাতীতভাবে সেদিনের রাতটি আর্জেন্টিনা ভক্তদের জন্যে দীর্ঘ একটি রাত ছিল। এই পরাজয় ভুলতে লিওনেল মেসি, গঞ্জালো হিগুয়েইন ও রদ্রিগো পালাসিওর অনেকটা সময় লেগেছিল। স্কোরলাইনটা বিপরীত হতে পারতো, যখন বিরতির ঠিক একটু পরে গোল করার একটি ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু তার শটটি পোস্টের বাইরে চলে যায়। ১২০ মিনিটের ফ্রি কিকও মিস করেন তিনি।

অন্যদিকে গঞ্জালো হিগুয়েন একটি সহজ সুযোগ হারান। টনি ক্রুসের হেডে বলটি তার পায়ের কাছে এসে পড়ে কিন্তু নয়ারকে একা পেয়েও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাইরে শট নেন।

সে সময়ের দৃশ্যটা ছিল এমন, হিগুয়েন অবিশ্বাসের সঙ্গে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আর ভক্তরা মাথায় হাত চেপে আক্ষেপের সুর তুলেছেন।

অবশ্য শেষ পর্যন্ত সমর্থকদের সে আক্ষেপ ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে ঘুচিয়েছেন মেসি। তরুণ একটি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে অবসান ঘটিয়েছেন ৩৬ বছরের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *