ক্যান্সার শব্দটা শুনলেই আঁতকে ওঠে সবাই। তার মধ্যে ‘কোলন ক্যান্সার’ এখন নতুন আতঙ্ক। আগে শুধু বয়স্কদের রোগ হিসেবেই বিবেচিত হতো, কিন্তু এখন ৫৫ বছরের নিচের বয়সীদের মধ্যেও এই ক্যান্সারের হার বাড়ছে, এমনটাই জানিয়েছে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি।
প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫৫ বছরের নিচে কোলন ক্যান্সারের হার প্রতি বছর ২.৪% হারে বেড়েছে। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার নতুন কোলন ক্যান্সারের রোগী শনাক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে Nature জার্নালে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের অন্ত্রে থাকা কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া (যেমন: E. coli) একটি বিষাক্ত উপাদান তৈরি করে যার নাম colibactin। এটি কোলনের কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে টিউমার বা ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
তবে আশার খবরও আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়াম কেবল কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেই নয়, বরং আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও বাড়ায়।
কোলন ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ:
পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া
বারে বারে পেটব্যথা বা ক্র্যাম্প
হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া
পায়খানা করার পরও না কমার অনুভূতি
দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
যেসব কারণে ঝুঁকি বাড়ে:
বয়স ৫০ বা তার বেশি
পরিবারে কারও কোলন ক্যান্সারের ইতিহাস
ক্রনিক অন্ত্রের রোগ যেমন: ক্রোন’স বা আলসারেটিভ কোলাইটিস
ফ্যাট বেশি, ফাইবার কম থাকা খাদ্যাভ্যাস
ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান
শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
প্রতিরোধের উপায় কী?
৪৫ বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিত স্ক্রিনিং করা উচিত
খাদ্যতালিকায় আঁশযুক্ত শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম ও গোটা শস্য রাখুন
ধূমপান ও মদ্যপান সীমিত করুন
প্রতিদিন অন্তত ২০–৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
স্বাস্থ্যসচেতনতা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা থাকলে অনেক আগেই কোলন ক্যান্সার শনাক্ত করা সম্ভব। মনে রাখবেন, ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়, প্রতিরোধ ও সচেতনতায় জয় সম্ভব।
Leave a Reply