চুপিসারে ধীরে ধীরে শরীরকে গ্রাস করে ফেলে কিডনি রোগ। প্রাথমিক পর্যায়ে এর লক্ষণগুলো এতটাই অস্পষ্ট থাকে যে অনেকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাতে কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ দেখা দিলে তা কিডনির সমস্যা শুরু হওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে। এসব লক্ষণকে অবহেলা না করে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
রাতের নিঃস্তব্ধতায় শরীরের ভেতরের অনেক সংকেত স্পষ্টভাবে ধরা দেয়। বিশেষ করে ঘুমানোর সময় কিংবা মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেলে যদি কিছু অস্বাভাবিক উপসর্গ অনুভব করেন, তাহলে তা কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
নীচে এমন ৫টি উপসর্গ তুলে ধরা হলো, যেগুলো রাতে দেখা গেলে কিডনি সমস্যার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
১. ঘন ঘন মূত্রত্যাগের প্রয়োজন:
রাতের বেলায় বারবার ঘুম ভেঙে টয়লেটে যেতে হলে সেটি কিডনির সমস্যা বোঝাতে পারে। সাধারণত, কিডনি যখন ঠিকমতো ফিল্টারিং করতে পারে না, তখন এই ধরনের মূত্রনালীর সমস্যা দেখা দেয়।
২. পায়ে ও গোঁড়ালিতে ফুলে যাওয়া:
রাতে বা ঘুমের সময় যদি হঠাৎ পা বা গোঁড়ালিতে ফোলা দেখা যায়, তবে তা জল জমে যাওয়ার কারণে হতে পারে। কিডনি যদি অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শরীরে ফ্লুইড জমে গিয়ে এমনটা ঘটতে পারে।
৩. নিদ্রাহীনতা ও অনিদ্রা:
অনেক সময় কিডনির সমস্যার প্রভাবে শরীরে টক্সিন জমতে শুরু করে, যা ঘুমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এমনকি রাতে ঘুম না হওয়া বা অতিরিক্ত অস্থিরতা কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাসের প্রভাব হিসেবেও দেখা দিতে পারে।
৪. শ্বাসকষ্ট বা নিশ্বাসে ভারী ভাব:
রাতে হঠাৎ করে দমবন্ধ ভাব বা শ্বাস নিতে কষ্ট হলে তা শুধু হার্ট নয়, কিডনির সমস্যার সঙ্গেও জড়িত হতে পারে। কিডনি ঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে পানি জমে ফুসফুসেও চলে যেতে পারে, যা শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
৫. ত্বকে চুলকানি ও শুষ্কতা:
কিডনি আমাদের রক্ত পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি খনিজ ও পুষ্টির ভারসাম্যও রক্ষা করে। যদি এই কাজটি ব্যাহত হয়, তবে ত্বকে চুলকানি ও শুষ্কভাব দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে রাতে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
এই উপসর্গগুলো প্রতিনিয়ত বা ঘন ঘন দেখা দিলে দেরি না করে নেফ্রোলজিস্ট বা কিডনি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। পাশাপাশি রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত যে কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা।
কিডনি রোগ এক নীরব ঘাতক। তাই রাতের অজানা সংকেতকে গুরুত্ব দিয়ে তড়িত চিকিৎসা গ্রহণ করলেই সম্ভব এই রোগের হাত থেকে বাঁচা। শরীরের ছোট ছোট অস্বস্তিকেও অবহেলা না করে সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।
Leave a Reply