আসছে নতুন বাজেট। আগামী সোমবার ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার প্রায় সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এরই মধ্যে বাজেট উপস্থাপনের প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি ও শিল্পখাতের ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে কিছু পণ্যের শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে একদিকে ভোক্তা পর্যায়ে কিছুটা স্বস্তি মিললেও, অন্যদিকে দেশীয় শিল্প খাত পড়তে পারে অসম প্রতিযোগিতার মুখে।
যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে:
নতুন বাজেটে চিনির প্রতি মেট্রিক টনে শুল্কায়ন মূল্য ৫০০ টাকা কমানোর প্রস্তাব রয়েছে। পাশাপাশি শুল্ক কমানো হচ্ছে বাটার, লবণ, কম ফ্যাটযুক্ত সয়াবিন তেল, বিদেশি জুস, জ্বালানি তেল, ইনসুলিন ও এর প্যাকেজিং উপকরণ, পশুখাদ্য, চুনাপাথর, দেশীয় কাগজ, কালি, শিরিশ কাগজ, নিউজপ্রিন্ট, ১৬ থেকে ৪০ আসনের বাস, ১০ থেকে ১৫ আসনের মাইক্রোবাস, ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল, ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, আর্ট কার্ড, ক্রাউফট লাইনার পেপার, পরিবেশবান্ধব ফ্রুট ব্যাগ, ব্রেক প্যাড এবং ক্রিকেট ব্যাটের ওপরও।
তবে বাস্তবে এসব পণ্যের দাম কতটা কমবে, তা নির্ভর করবে বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, অনেক সময় শুল্ক কমানোর সুফল সরাসরি ভোক্তার হাতে পৌঁছায় না।
যেসব শিল্প খাত পড়তে পারে চাপে:
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, শুল্ক কমিয়ে আমদানি পণ্যের প্রবাহ বাড়লে দেশে উৎপাদিত সমজাতীয় পণ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পিভিসি পাইপ, কপার ওয়্যার, মোটর ও ব্যাটারিশিল্প, লিফট, এলইডি বাতি, রাইস ব্র্যান ওয়েল এবং টায়ার-টিউব খাত।
পিভিসি পাইপ দেশে উৎপাদন হলেও এর কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। এবার এ খাতে কাঁচামালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। একইভাবে কপার ওয়্যারের কাঁচামালে শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
কেমিক্যাল ও সফটওয়্যার খাতে পরিবর্তন:
বন্ড অপব্যবহার রোধে কেমিক্যাল পণ্যের আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদেশি সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করায় দেশীয় সফটওয়্যার নির্মাতারা পড়তে পারেন নতুন চ্যালেঞ্জে।
বিশ্ববাজারে নজর দিয়ে রপ্তানিমুখী উদ্যোগ:
জাপান, ইউরোপ ও আমেরিকায় চাহিদাসম্পন্ন জাপানিজ স্ক্যালোপ আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে, যাতে রপ্তানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায়।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজেট বাস্তবায়নে নীতিগত সমন্বয় ও বাজার তদারকি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।
Leave a Reply