বাংলাদেশের ক্রিকেটে যেন এক ঝড় উঠে গেলো! মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় বদলে গেল বোর্ডের শীর্ষ নেতৃত্ব। বুধবার রাতের শান্ত আবহে যে বৈঠক বসেছিল, সেটাই হয়ে উঠলো বিসিবির ইতিহাসে এক নাটকীয় মোড়ের সূচনা।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে হঠাৎ ডেকে পাঠানো হলো যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাসভবনে। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হলো সরকার নতুন কাউকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে চাইছে। ফারুক আহমেদকে পদত্যাগ করতেও বলা হয়। ফারুক কিন্তু সহজে মাথা নোয়ানোর লোক নন। সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘আমি পদত্যাগ করবো না।’
এরপর যা ঘটলো, সেটি যেন সরাসরি কোনো রাজনৈতিক থ্রিলার সিনেমার চিত্রনাট্য! যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করে দিল এক তরফাভাবে, আর বোর্ডে হাজির করলো এক নতুন চেহারা জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে।
বোর্ড পরিচালক পদে নির্বাচিত হওয়ার পর খুব দ্রুতই পরিচালকদের ভোটে তিনিই বসলেন সভাপতির চেয়ারে। ক্রিকেটপাড়া হতবাক, বিস্মিত, কেউ কেউ উল্লসিত। তবে কেনো এত তাড়াহুড়ো? কেনো মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরাতে হলো ফারুককে?
শনিবার বিকেলে এই প্রশ্নের জবাব দিতে সামনে এলেন আসিফ মাহমুদ। বললেন, ‘এটা কোনো শাস্তি নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে আমরা আশানুরূপ উন্নয়ন দেখিনি। পাকিস্তান সিরিজ জয়ের পর থেকে পারফরম্যান্স শুধু নিচের দিকে গেছে। বিপিএলের অবস্থাও হতাশাজনক।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা যাকে নিয়োগ দিয়েছিলাম, বিশ্বাস ছিল, তিনি পারফর্ম করবেন। কিন্তু না। পারফরম্যান্সই শেষ কথা। বাফুফে তার উদাহরণ। নতুন নেতৃত্ব, নতুন উদ্দীপনা- আর আজ ফুটবলে এসেছে নবজাগরণ। আমরা সেটাই চেয়েছি ক্রিকেটেও।’
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের মেয়াদ ছিল আগামী আগস্ট পর্যন্ত। হাতে ছিল পুরো দুই মাস সময়। অথচ এর আগেই তাকে তড়িঘড়ি করে সরিয়ে ফেলা হলো। ক্রিকেটপমহলে একটাই গুঞ্জন, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কেনো এমন পদক্ষেপ? তবে বিস্ময়ের বিষয়, ঘটনার পর কেটে গেছে দুই দিন, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেউই দেননি এর সরাসরি কোনো ব্যাখ্যা।
Leave a Reply