যে কারনে ডি মারিয়াকে কখনো ভুলতে চান না মাশরাফী?

মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। নামেই যা পরিচয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের আর্জেন্টিনার সমর্থক হিসেবে বেশ খ্যাতি রয়েছে। গত কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর আলবিসেলেস্তাদের সমর্থকদের সঙ্গে তার উদযাপনের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

আরও এক ফাইনালে আর্জেন্টাইনরা। সোমবার কোপা আমেরিকার ফাইনালে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। দেশের জার্সিতে সর্বশেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। আবেগে ভাসছেন দলটির সমর্থকরা।

মাশরাফিও তার ব্যতিক্রম নন। ডি মারিয়ার বিদায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন এক পোস্ট দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। সেই পোস্টে তিনি লিওনেল মেসির তুলনায় ডি মারিয়াকে এগিয়ে রেখেছেন।

পাঠকদের জন্য মাশরাফীর সেই পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো

‘আনহেল দি মারিয়া তার শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন। স্বাভাবিকভাবে আর্জেন্টিনা দল চাইবে ট্রফি জিতে তাকে দারুণ একটা বিদায় দিতে। আনহেল কী করেছে আর্জেন্টিনার জন্য, তা চিন্তা করলে মনে হয় শুধু মেসির কারণে সে সবসময় চোখের আড়ালে থেকে গেছে।

বেশি দূরে যেতে হবে না, ২০১৪ বিশ্বকাপে তার ইনজুরির দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এমনকি মেসিও ফাইনালে কিছুই করতে পারেনি, কারণ দি মারিয়া মাঠে না থাকলে ডিফেন্ডারদের মেসিকে মার্ক করা কিছুটা সহজ হয়ে যায়। সেদিন ফাইনালে লাভেজ্জি তাও বেশ ভালো খেলছিল যে কারণে বেশ কিছু সুযোগ আর্জেন্টিনা তৈরিও করেছিল, এমনকি লাভেজ্জির একটা ক্রস থেকে হিগুয়েন গোল করলেও তা অফসাইড হয়।

হাফটাইমের পর কোচ আলেহান্দ্রো সাবেয়া লাভেজ্জিকে উঠিয়ে আগুয়েরোকে মাঠে নামায় স্রেফ বড় নামের কারণে। ব্যস আর্জেন্টিনার আক্রমণ শেষ হয়ে গেল। অথচ দি মারিয়া থাকলে বিষয়টা পুরো ভিন্ন হতে পারতে। কোপার ফাইনালে ব্রাজিলকে গোল করা বা বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে গোল করা এগুলো বলাই যায়।

তবে দি মারিয়া ছাড়া মেসি বা আর্জেন্টিনা কতোটা দুর্বল তা বোঝার জন্য শেষ বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখলেই বোঝা যায়। ৭০ মিনিটের পর দি মারিয়াকে উঠিয়ে নিল স্কালোনি, ব্যস ফ্রান্স একের পর এক আক্রমণ শুরু করল এবং দুই গোলই শোধ করে ফেলল।

অথচ দি মারিয়া মাঠে থাকতে ফ্রান্স মেসি এবং ডি মারিয়া দুজনকেই মার্কে রাখতে হচ্ছিল, যার কারণে তারা অলআউট চাইলেও খেলতে পারছিল না। এমনকি আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপে নক আউটে অলমোস্ট সব ম্যাচেই গোল খেয়েছে দি মারিয়া মাঠ ছাড়ার পর।

এমনকি ২০১৮ বিশ্বকাপে এই ফ্রান্সের কাছেই ৪-৩ গোলে হেরেছিল, কিন্তু প্রথম গোল পেনাল্টিতে গ্রিজম্যান যখন দেয় ঠিক তার কিছুক্ষণ পর দি মারিয়া ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুন এক রেইনবো কিকে সমতায় ফিরেয়েছিলেন আর্জেন্টিনাকে।

এরকম অনেক অনেক দারুণ সব স্মৃতি তিনি মাঠে ছেড়ে যাচ্ছেন, শুধু তাই না মেসির পিক টাইমেই, ডি মারিয়া ছাড়া মেসিকে অনেক ম্যাচ নিষ্পাণ মনে হয়েছে, আর মেসির শেষ সময়ে যখন মেসি তার সেই গতি হারিয়েছে তখন দি মারিয়া ছাড়া কি করবে তা সময়ই বলে দিবে।

তবে একটা বিষয় অবশ্যই বলা উচিত, এই দলটা অনেকটাই মেসি নির্ভরতা কাটিয়ে উঠেছে, প্রায় ম্যাচেই অন্যরা গোল করছে এবং ভালোও খেলছে, স্কালোনির সবচেয়ে বড় আবিষ্কার সম্ভবতো এটাই।

আনহেল ডি মারিয়া আপনাকে কুর্নিশ, একজন অন্ধ আর্জেন্টাইন ফুটবলের সমর্থক হিসেবে। আপনি অবশ্যই গুরু ডিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনার যোগ্য উত্তরসূরি। আপনাকে ভোলা প্রায় অসম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *