free tracking

জুনের মধ্যেই চিরতরে বাতিল হচ্ছে যেসব জমির দলিল!

ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও ডিজিটালকরণ নিশ্চিত করতে ছয় শ্রেণির দলিল চূড়ান্তভাবে বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যেই এসব দলিল বাতিল করা হবে।

সূত্র জানায়, চলমান দলিল স্ক্যানিং ও অনলাইনকরণ প্রক্রিয়া থেকে ছয় ধরনের দলিলকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া হবে। এসব দলিল আইনগত জটিলতা, জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তৈরি হওয়ায় ভবিষ্যতে বিরোধ ও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

বাতিল হতে যাওয়া ছয় ধরনের দলিল:
১. হেবা দলিল: অসুস্থ, অক্ষম ব্যক্তিকে ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তর করা হলে বা হেবা তৈরির নিয়ম না মানলে দলিলটি বাতিল হবে।

২. ওসিয়তনামা দলিল: আইন অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশের বেশি সম্পত্তি ওসিয়তের মাধ্যমে দান করা গেলে, এবং ওয়ারিসদের কারও প্রতি ইচ্ছাকৃত বৈষম্য করা হলে সেই দলিল বাতিল বলে গণ্য হবে।

৩. রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল: কেবল মুহুরির মাধ্যমে তৈরি কিন্তু রেজিস্ট্রি না হওয়া দলিল বাতিল হিসেবে গণ্য হবে এবং স্ক্যান/ডিজিটাল রূপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

৪. জাল দলিল: ভুয়া বা প্রতারণার মাধ্যমে তৈরি যেকোনো দলিল যদি প্রশাসনের নজরে আসে, তা বাতিল করে দেওয়া হবে। অনলাইনে একবার যুক্ত হলে এসব বাতিল করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে, তাই প্রক্রিয়াটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

৫. ক্ষমতার অপব্যবহারে অর্জিত দলিল: রাজনৈতিক প্রভাব, হুমকি বা জোরপূর্বক দখলের মাধ্যমে তৈরি দলিল বাতিল করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মালিকরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের অধিকার ফিরে পেতে পারবেন।

৬. অতিরিক্ত জমি বিক্রির দলিল: কোনও ওয়ারিস যদি তার অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রি করেন, অতিরিক্ত অংশের দলিল অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং প্রকৃত মালিক আদালতের মাধ্যমে নিজের অংশ ফিরে পেতে পারবেন।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাদের কাছে এই ছয় শ্রেণির দলিল রয়েছে, তারা যেন দ্রুত আইনি পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। প্রয়োজনে আদালতের মাধ্যমে সঠিক মালিকানা নিশ্চিত করা যাবে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে জমির মালিকানায় স্বচ্ছতা, প্রতারণা প্রতিরোধ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা ও ডিজিটালকরণের একটি বড় ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমি প্রশাসনের দীর্ঘদিনের জটিলতা ও অনিয়ম কাটিয়ে ওঠার এই প্রয়াস নাগরিকদের আস্থা ফেরাবে এবং ভূমি নিয়ে মামলার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।

সূত্র: https://l8.nu/-rkx

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *