free tracking

জমির মালিক হয়েও দখলে নাই? ১টি প্রমাণেই উদ্ধার করে দিবে স্থানীয় প্রশাসন!

নিজের নামে জমির দলিল ও উত্তরাধিকার স্বত্ব থাকা সত্ত্বেও দেশের অনেক নাগরিক আজও তাদের সম্পত্তির দখল বুঝে পান না। পরিচিত মহলে, এমনকি পরিবার-পরিজনের মধ্যেই ঘটে যাচ্ছে জমি সংক্রান্ত জটিলতা ও জবরদখলের ঘটনা। তবে আশার কথা হলো—বর্তমানে সরকারের ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের আওতায়, মাত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ থাকলেই জমির প্রকৃত মালিক তার ভোগদখল ফেরত পেতে পারেন, প্রশাসনের সহায়তায়।

সমস্যার চিত্র স্পষ্ট
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি জবরদখল এখন দেশের গ্রাম-গঞ্জ থেকে শুরু করে শহরাঞ্চলেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

কেউ পিতামাতার সম্পত্তির ওয়ারিশ হয়েও ভোগদখলে যেতে পারছেন না।
কেউ আবার পূর্বপুরুষের বন্ধক বা লিজ দেওয়া জমি ফেরত পাচ্ছেন না।
এমনকি অস্থায়ী বন্দোবস্ত বা বর্গা দেওয়া জমিও বছরের পর বছর ধরে অন্যরা দখল করে রেখেছে।
বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, দখলকারীরা জানে তাদের কাছে কোনো বৈধ দলিল নেই, তবু জমি ছাড়তে নারাজ।

সমাধানের পথ: একটি প্রমাণই যথেষ্ট
আইনজীবীরা বলছেন, জমির দখল পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় প্রমাণ খুব বেশি নয়। তিনটি মূল ডকুমেন্ট থাকলেই আইনি সহায়তা মিলবে:

ওয়ারিশান সনদ – আপনি প্রকৃত উত্তরাধিকার প্রমাণের মূল ভিত্তি।
মূল দলিল বা বাটোয়ারার দলিল – যার মাধ্যমে পূর্বপুরুষ সম্পত্তি পেয়েছেন (ক্রয় বা উত্তরাধিকার সূত্রে)।
হালনাগাদ খতিয়ান/রেকর্ড – জমির বর্তমান অবস্থার প্রমাণ।
এই তিনটি দলিল হাতে থাকলে জমির দখল ফেরত পাওয়া এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ।
আদালতের প্রক্রিয়ায় এসেছে বড় পরিবর্তন

সাম্প্রতিক বিচার সংস্কারের ফলে জমি সংক্রান্ত দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে দ্রুততম সময়ে।
ইমেইল বা এসএমএস-এর মাধ্যমে সমন পাঠানোর ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
সাক্ষী হাজিরের জটিলতা কমেছে।
রায় কার্যকর করতে আলাদা মামলা করার প্রয়োজন নেই।
আদালত সরাসরি জেলা প্রশাসনকে জমির দখল বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিতে পারবে।
ফলে ৮-১০ বছরের মামলা এখন ১-২ বছরের মধ্যেই নিষ্পত্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের কর্মকর্তারা।

আইনি পথই একমাত্র নিরাপদ বিকল্প
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন—অবৈধ উচ্ছেদ বা জবরদখলের পথে গেলে বিপদে পড়ার আশঙ্কা বেশি। আইনভঙ্গ করলে প্রকৃত মালিক হয়েও উল্টো মামলার মুখোমুখি হতে হতে পারেন। অনেক সময় গ্রাম্য সালিশও ফলপ্রসূ হয় না।

তাই আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার আগে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারি উদ্যোগ এবং জনসচেতনতা
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন” বাস্তবায়নে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে লোকবল ও অবকাঠামো সংকট এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য কোথাও কোথাও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জমি দখল বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা ধীরগতি।

তবু সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জানাচ্ছে, যাদের কাছে সঠিক কাগজপত্র রয়েছে, তারা আইনি সহায়তা চাইলেই দ্রুত সমাধান পেতে পারেন।

সংক্ষিপ্ত পরামর্শ:
আপনি যদি জমির প্রকৃত মালিক হন, আর দখলে না থাকেন—

সংশ্লিষ্ট খতিয়ান
এই তিনটি কাগজ হাতে রেখে প্রশাসনের দ্বারস্থ হোন বা আদালতের সহায়তা নিন।

এটাই এখন আপনার জমি ফিরে পাওয়ার সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর পথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *