free tracking

ওবায়দুল কাদের গ্রে’প্তা’র, বেরিয়ে এলো সত্যতা!

“ব্রেকিং – গুলশান থেকে গ্রেপ্তার ওবায়দুল কাদের!”—সম্প্রতি এমন একটি নাটকীয় শিরোনাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ঝড় তোলে। কেউ শেয়ার করছেন, কেউ অবাক হচ্ছেন, কেউ আবার চুপিচুপি বিশ্বাসও করে বসেছেন। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। এ খবরটি পুরোপুরি মিথ্যা এবং কোনো সত্যতার ভিত্তি নেই।

তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমর স্ক্যানার জানায়, এই তথাকথিত “সংবাদ” এসেছে ‘প্রিয়বাংলা২৪’ নামের এক অনির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট থেকে। সেখানে ৩১ মে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়, যাতে দাবি করা হয়—ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত ছেলে’ আসাদুজ্জামান হিরুকে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও বলা হয়, তিনি বাড্ডার একটি হত্যা মামলার আসামি এবং নিজেকে কাদেরের পালিত সন্তান বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

তবে এই গল্পটা কেবল গল্পই থেকে গেছে।

না পুলিশ, না কোনো সরকারি সংস্থা—কেউই এই বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি। না টিভি, না পত্রিকা—দেশের কোনো প্রধানধারার গণমাধ্যমেও এমন কোনো তথ্য প্রচার হয়নি। ফলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিষয়ে চারদিকের এ নীরবতা স্পষ্টই ইঙ্গিত দেয় যে, এটি নিছক গুজব।

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান আরও বলছে, যাদের নাম ঘিরে এই নাটক সাজানো হয়েছে, তাদের সঙ্গে “প্রমাণ” বলতে কিছুই নেই—না ছবি, না ভিডিও, না কোর্টের কাগজ। এমনকি “গ্রেপ্তারের” কথা বলা হলেও, কাদের সাহেব কোথায়, কীভাবে, কখন গ্রেপ্তার হলেন—এসব মৌলিক প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই।

সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে গুজব যেমন দ্রুত ছড়ায়, তেমনি বিভ্রান্তিও তৈরি করে। এক ক্লিকেই মানুষ বিচারক হয়ে যায়, আর ‘ভাইরাল’ শব্দটা হয়ে ওঠে সত্য-মিথ্যার মাপকাঠি। অথচ, একটিবার চোখ রাখলেই বোঝা যায়—গল্পটা ফাঁপা, তথ্যহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তাহলে আসল সত্য কী?

ওবায়দুল কাদেরকে কেউ গ্রেপ্তার করেনি। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতির মধ্যেও নেই। পুরো ঘটনাটি একটি ভিত্তিহীন গুজব, যার পেছনে থাকতে পারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিংবা নিছক ক্লিকবেইট।

এ ঘটনায় আমাদের শিখবার মতো অনেক কিছু আছে—বিশেষ করে তথ্য যাচাইয়ের গুরুত্ব। তাই, সামাজিক মাধ্যমে চোখ বুজে বিশ্বাস করার আগে, চোখ খুলে সত্য যাচাই করা জরুরি।

গুজব ছড়ালে লাভ একদলের, কিন্তু ক্ষতিটা গোটা সমাজের। তাই গুজবকে না বলুন, দায়িত্বশীল থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *