বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে আজকের দিনটি একটি স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে। বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হলো ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর। আর অভিষেক ম্যাচেই নিজেকে প্রমাণ করলেন দুর্দান্তভাবে। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে শুরুতেই গোল করে পুরো স্টেডিয়াম মাতিয়ে দিলেন এই নতুন তারকা।
ম্যাচের মাত্র ষষ্ঠ মিনিটেই দুর্দান্ত এক শটে গোল করে বাংলাদেশকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন হামজা চৌধুরী। মাঝমাঠে বল কন্ট্রোল, পাসিং আর ট্যাকলিংয়ে দারুণ দক্ষতা দেখান তিনি। তার খেলা দেখে বোঝা যায়, বাংলাদেশ দলের মাঝমাঠে বহুদিনের যে শূন্যতা ছিল, তা এবার পূরণ হতে যাচ্ছে। গ্যালারিভর্তি দর্শকরা বারবার হামজার নাম ধরে চিৎকার করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে হাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা। ম্যাচের ৬৭তম মিনিটে মিডফিল্ডার সোহেল রানা আরেকটি গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২-০ গোলে ম্যাচ জিতে নেয়।
ম্যাচ শেষে কোচ ক্যাবরেরা বলেন, “হামজার আগমন আমাদের জন্য আশীর্বাদ। ওর অভিষেকটা স্রেফ স্বপ্নের মতো হয়েছে।” হামজার উপস্থিতিতে বাংলাদেশের মাঝমাঠ হয়ে উঠেছে আরও গোছানো ও আত্মবিশ্বাসী। পুরো ম্যাচে বল দখলের লড়াই, পাস একুরেসি এবং ডিফেন্সিভ কভারেজ—সব কিছুতেই বাংলাদেশ ছিল এগিয়ে।
মাঠে যেমন ছিল উত্তেজনা, গ্যালারিতেও তেমনি ছিল উন্মাদনা। হাজারো দর্শক একযোগে “হামজা… হামজা” বলে চিৎকার করছিলেন। অনেকের চোখে জলও দেখা গেছে—প্রিয় দেশের হয়ে এমন একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড় খেলছে, এটা যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না।
এই ম্যাচ দিয়ে নতুন করে আশার আলো দেখছে বাংলাদেশ ফুটবল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজস্ব জায়গা করে নিতে হলে এমন পারফরম্যান্স আরও প্রয়োজন। আর সেই যাত্রার নেতৃত্বে যদি থাকেন হামজা চৌধুরীর মতো একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়, তবে ভবিষ্যৎ নিশ্চয়ই উজ্জ্বল।
Leave a Reply