free tracking

আপনার অজান্তেই শরীরে প্রস্টেট ক্যান্সার দানা বাঁধছে না তো? জেনে নিন কখন সাবধান হবেন!

পুরুষদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে যে ফুসফুসের ক্যানসারের পরে পুরুষদের মধ্যে এটিই সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার। চিকিৎসকদের মতে, ৫০ বছর বয়সের পর এই রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়, যদিও এটি অল্পবয়সী পুরুষদের মধ্যেও দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে প্রস্টেট ক্যানসার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণযোগ্য, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো অলক্ষিত থেকে যায়। তাই এই লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।

প্রস্টেট ক্যানসারের কারণ ও ঝুঁকি
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে প্রস্টেট ক্যানসার হতে পারে। মহারাষ্ট্রের মাহিমের এসএল রাহেজা হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ইউরোলজিস্ট ডাঃ আনন্দ উত্তুরে জানান, ৬৫ বছর বয়সের পর প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি জানিয়েছে যে প্রায় আটজন পুরুষের মধ্যে একজনের প্রস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডাক্তাররা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, সময়মতো চিকিৎসা শুরু না করা হলে প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত ৪৫ শতাংশ পুরুষ মারা যান। অতএব, এই রোগের লক্ষণগুলো আগে থেকেই শনাক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোন ভিটামিনের ঘাটতি বাড়ায় ঝুঁকি?
সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি-এর অভাব কিছু ক্ষেত্রে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সূর্যের আলো থেকে প্রাপ্ত এই ভিটামিন হাড়ের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি কোষের বৃদ্ধি এবং বিভাজনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই, ভিটামিন ডি-এর পর্যাপ্ত মাত্রা বজায় রাখা প্রস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধের একটি সম্ভাব্য উপায় হতে পারে।

ঠিক কোন লক্ষণ দেখলে সাবধান হবেন?
প্রস্টেট ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো অনেক সময় সাধারণ প্রস্রাবের সমস্যার মতো মনে হতে পারে, তাই এগুলোতে নজর রাখা জরুরি:

প্রস্রাব করতে অসুবিধা: প্রস্রাব শুরু করতে বা শেষ করতে সমস্যা হওয়া।
প্রস্রাবের দুর্বল প্রবাহ: প্রস্রাবের ধারা দুর্বল বা থেমে থেমে হওয়া।
ঘন ঘন প্রস্রাব: বিশেষ করে রাতে বারবার প্রস্রাবের বেগ পাওয়া।
প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া: মূত্রত্যাগের সময় অস্বস্তি অনুভব করা।
প্রস্রাব বা বীর্যে রক্ত: এটি একটি গুরুতর লক্ষণ, যা দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শ্রোণী (pelvic) অঞ্চলে বা নিতম্বের নিচে ব্যথা: প্রস্টেট গ্রন্থির আশেপাশে বা নিচের দিকে অবিরাম ব্যথা।
ইরেকশন সমস্যা: যৌন ক্ষমতায় পরিবর্তন বা সমস্যা অনুভব করা।
প্রতিরোধের উপায় ও চিকিৎসকের পরামর্শ
অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। সুষম খাবার গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করা প্রস্টেট স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।

প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যেমন বেশি, তেমনই প্রাথমিক পর্যায়ে তা নিরাময়ের জন্যও এসেছে অত্যাধুনিক রেডিয়েশন এবং অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই আসল কথা। অতএব, উল্লেখিত লক্ষণগুলির মধ্যে যেকোনো একটি যদি আপনার মধ্যে দেখা যায়, তাহলে কোনো রকম সন্দেহ না রেখে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় জীবন বাঁচানোর সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *