free tracking

আর্জেন্টিনা বনাম কলম্বিয়া: শেষ মুহুর্তের নাটকীয় গেল, ৯০ মিনিটের খেলা শেষ!

নিজস্ব প্রতিবেদক:বিশ্বকাপ ২০২৬-এর দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যকার খেলা ১-১ গোলের ড্রয়ে শেষ হয়েছে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল বুয়েনস আইরেসের বিখ্যাত এস্টাডিও মাস মনুমেন্টালে। আর্জেন্টিনা ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে একজন খেলোয়াড় কম নিয়ে খেললেও শেষ মুহূর্তে গোল করে সমতা ফেরাতে সক্ষম হয়।

ম্যাচের প্রথমার্ধে আক্রমণাত্মক খেলেছে কলম্বিয়া। খেলার ২৪তম মিনিটে লিভারপুল তারকা লুইস দিয়াজ দুর্দান্ত একটি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। বাম দিক থেকে ডিবক্সে ঢুকে তিনি শক্তিশালী শটে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন।

প্রথমার্ধে বল দখল এবং পাসিংয়ে আধিপত্য থাকলেও আর্জেন্টিনার আক্রমণে ধার ছিল না। তাদের কয়েকটি প্রচেষ্টা সহজেই প্রতিহত করে কলম্বিয়ার রক্ষণভাগ।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আগ্রাসী হয় আর্জেন্টিনা। তবে ম্যাচের ৭০ মিনিটে মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। এ সময়ে মনে হচ্ছিল ম্যাচটি আর্জেন্টিনার জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠবে। কিন্তু কোচ লিওনেল স্কালোনির কৌশলী পরিবর্তন ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেয়।

৭৯ মিনিটে দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে বদলি করে মাঠ থেকে তুলে নেন স্কালোনি। তার ঠিক দুই মিনিট পর, ৮১ মিনিটে থিয়াগো আলমাদা ডান দিক থেকে বল নিয়ে দুইজন ডিফেন্ডারকে নাটমেগ করে অসাধারণ ফিনিশিংয়ে গোল করেন। এই গোলের মাধ্যমে ১০ জনের আর্জেন্টিনা ম্যাচে সমতা ফেরাতে সক্ষম হয়।

ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দুই দলই জয় ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য আক্রমণ চালায়, তবে কোনো পক্ষই আর গোল করতে পারেনি।

ম্যাচের পরিসংখ্যান অনুযায়ী:

আর্জেন্টিনা বলের দখলে ছিল বেশ এগিয়ে (৬৬ শতাংশ)।

তারা ৬০২টি পাস আদান-প্রদান করেছে যেখানে কলম্বিয়া করেছে ৩১৮টি।

আর্জেন্টিনার পাস সঠিকতার হার ছিল ৯১ শতাংশ, কলম্বিয়ার ছিল ৮৩ শতাংশ।

দুটি দলই মোটামুটি সমানসংখ্যক শট নেয় (আর্জেন্টিনা ১০, কলম্বিয়া ১১)।

আর্জেন্টিনার তিনটি শট লক্ষ্যে ছিল, কলম্বিয়ার পাঁচটি।

আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা ১৫টি ফাউল করে, কলম্বিয়া করে ১১টি।

লাল কার্ড ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত:

এনজো ফার্নান্দেজের লাল কার্ড নিয়ে কিছু বিতর্ক উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, রেফারির সিদ্ধান্ত কিছুটা কঠোর ছিল। তবে প্রযুক্তির সাহায্যে পুনরায় দেখার পর সিদ্ধান্তটি বহাল রাখা হয়।

পয়েন্ট টেবিলের বর্তমান অবস্থা:

এই ড্রয়ের ফলে আর্জেন্টিনা ১৬ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে। কলম্বিয়া ১৬ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের শীর্ষ চার দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে, আর পঞ্চম দলকে প্লে-অফ খেলতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া:

ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেকে মেসিকে ম্যাচ থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ বলেছেন, তিনি দলের ভারসাম্য কমিয়ে দিচ্ছিলেন। অন্যদিকে, থিয়াগো আলমাদার গোলটি প্রশংসিত হয়েছে বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে।

এই ম্যাচ আবারও প্রমাণ করেছে, কেন আর্জেন্টিনাকে কখনোই খাটো করে দেখা যায় না। একজন কম নিয়ে খেলেও তারা ম্যাচে ফেরার ক্ষমতা রাখে। তরুণ খেলোয়াড় থিয়াগো আলমাদা দেখিয়েছেন, তিনি ভবিষ্যতে দলের অন্যতম প্রধান ভরসা হয়ে উঠতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *