বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই ধারণা করেন, ক্যান্সার মানেই মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে এই রোগ এখন আর অজেয় নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে তা সম্পূর্ণভাবে নিরাময় সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের বরাতে জানা গেছে, ক্যান্সারের কিছু উপসর্গ শরীরে আগাম দেখা দিতে পারে, যেগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। নিচে তেমনই ১০টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো—
১. দীর্ঘস্থায়ী জ্বর: শরীরে যদি বারবার জ্বর আসে বা দীর্ঘদিন জ্বর কমে না, তবে তা হতে পারে রক্তে ছড়িয়ে পড়া ক্যান্সারের লক্ষণ।
২. অস্বাভাবিক ক্লান্তি: বিশ্রাম নিয়েও যদি ক্লান্তি দূর না হয়, তাহলে তা লিউকেমিয়া জাতীয় ক্যান্সারের পূর্বলক্ষণ হতে পারে।
৩. হঠাৎ ওজন হ্রাস: কোনো ডায়েট ছাড়াই হঠাৎ কয়েক কেজি ওজন কমে গেলে তা অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী বা ফুসফুস ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে।
৪. ত্বকের পরিবর্তন: ত্বকে অস্বাভাবিক কালোভাব, লালচে ভাব, চুলকানি বা চোখ ও ত্বকের হলদেটে ভাবও হতে পারে ক্যান্সারের লক্ষণ।
৫. গিলতে কষ্ট: খাবার বা পানি গিলতে সমস্যা হলে গলা, ইসোফেগাস বা পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে।
৬. দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন: তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকলে বা গলার স্বরে পরিবর্তন এলে ফুসফুস বা থাইরয়েড ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে।
৭. প্রস্রাব ও মলত্যাগে অস্বাভাবিকতা: প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, রক্ত আসা অথবা মলের রঙ ও গঠনে পরিবর্তন কিডনি, প্রোস্টেট বা মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
৮. ঘা শুকাতে দেরি হওয়া: মুখে বা শরীরের কোথাও ক্ষত হলে এবং তা চার সপ্তাহের মধ্যেও না শুকালে, তা হতে পারে মুখের ক্যান্সারের ইঙ্গিত।
৯. অসাধারণ গাঁট বা চাকা অনুভব: স্তন, অণ্ডকোষ বা শরীরের অন্যান্য অংশে চাকা বা শক্ত গাঁট অনুভব করাও ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
১০. রক্তপাত: কাশি, মল, প্রস্রাব কিংবা জনিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত দেখা দিলে তা অবশ্যই অবহেলা না করে দ্রুত পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব উপসর্গ যদি নিয়মিত ও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা উপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে ক্যান্সারও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
Leave a Reply