গরমে দেশে বিদ্যুৎ ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে মাসিক বিদ্যুৎ বিলও। তবে একটু সচেতন হলেই ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। নিচে এমন ৭টি কার্যকর টিপস তুলে ধরা হলো, যেগুলো মেনে চললে আপনি প্রতি মাসেই সাশ্রয় করতে পারবেন একটানা টাকা।
১. দিনের আলো ব্যবহার করুন যতটা সম্ভব
দেয়াল বা পর্দায় হালকা রঙ ব্যবহার, জানালার সামনে প্রতিবন্ধক না রাখা—এই ছোট কাজগুলো আপনার ঘরে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশে সাহায্য করবে। এতে দিনের বেলায় বাতি জ্বালানোর প্রয়োজন কমে যাবে।
২. এসি ও ফ্যান একসঙ্গে চালিয়ে বিদ্যুৎ বাঁচান
অনেকে মনে করেন শুধু এসি চালালেই যথেষ্ট, কিন্তু এটি বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। বরং ২৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসি চালিয়ে সঙ্গে সেইলিং ফ্যান (ছাদ ফ্যান) চালালে ঘরের ঠান্ডা বাতাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে এসির ওপর চাপ কম পড়ে এবং কম সময়ে ঘর ঠান্ডা হয়। ফলে বিদ্যুৎ খরচও অনেক কমে আসে।
যাদের ঘরে শুধু ফ্যান আছে, তাদের জন্য বিশেষ টিপস:
- ফ্যান চালু রাখুন কেবল ঘরে থাকলে।
- ফ্যানের ব্লেড নিয়মিত পরিষ্কার করুন, ধুলো জমলে গতি কমে যায়।
- জানালা এমনভাবে খোলা রাখুন, যাতে তাজা বাতাস ঢুকতে পারে।
- সম্ভব হলে এনার্জি সেভার (BLDC) ফ্যান ব্যবহার করুন—বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও দীর্ঘস্থায়ী।
৩. ফ্রিজ খোলার পর দ্রুত বন্ধ করুন
প্রতি বার ফ্রিজ খোলা মানেই সেটার ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। এতে কম্প্রেসারকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়, যার ফলে বিদ্যুৎ খরচ বাড়ে। প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আগে ঠিক করে রাখুন, তারপর ফ্রিজ খুলুন।
৪. ওয়াশিং মেশিন চালান নির্দিষ্ট সময়ে
আধা পূর্ণ মেশিন বারবার না চালিয়ে একবারে পুরো কাপড় ধুয়ে ফেলুন। হালকা ময়লা কাপড়ের জন্য ইকো মোড ব্যবহার করুন, এতে পানি ও বিদ্যুৎ—দুই-ই সাশ্রয় হবে।
৫. অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ‘স্ট্যান্ডবাই’ মোডে না রেখে বন্ধ করুন
টিভি, চার্জার, রাউটার ইত্যাদি অনেক ডিভাইস স্ট্যান্ডবাই মোডেও বিদ্যুৎ খরচ করে। তাই রাতের বেলা বা বাইরে যাওয়ার সময় এগুলো পুরোপুরি বন্ধ করে দিন।
৬. এলইডি বাতি ব্যবহার করুন
সাধারণ ইনস্যান্ডেসেন্ট বা সিএফএল বাল্বের চেয়ে এলইডি লাইট অনেক বেশি কার্যকর ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। যদিও দাম একটু বেশি, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটা খরচ কমায়।
৭. রেগুলার সার্ভিসিং করুন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের
ফ্রিজ, এসি, পানির মোটর, পাম্প—এইসব যন্ত্রের সময়মতো সার্ভিসিং না করলে সেগুলো বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। বছরে অন্তত একবার পেশাদারের মাধ্যমে এগুলো পরীক্ষা করে নিন।
শেষ কথা
বিদ্যুৎ বিল কমানো শুধু নিজের সাশ্রয়ের বিষয় নয়, এটি জাতীয় পর্যায়েও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনি যদি এসব নিয়ম প্রতিদিন একটু খেয়াল করে মেনে চলেন, মাস শেষে বিল দেখে চমকে যাবেন না—বরং খুশি হবেন!
Leave a Reply