সরকারি-বেসরকারি অনেক সেবা গ্রহণে এতদিন পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দাখিল করা বাধ্যতামূলক ছিল। প্রায় ৪৫টি সেবা নিতে হলে টিআইএন নম্বর থাকলেও, রিটার্ন ফাইল করার প্রমাণ দেখাতে হতো। তবে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে এই বাধ্যবাধকতা আংশিকভাবে শিথিল করা হয়েছে।
অর্থাৎ, এখন থেকে নির্দিষ্ট ১১টি সেবা গ্রহণে আর রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র লাগবে না, শুধু সিস্টেম-জেনারেটেড টিআইএন সার্টিফিকেট থাকলেই চলবে। এতে করে অনেক সাধারণ ট্যাক্সদাতার জন্য প্রক্রিয়া আরও সহজ ও স্বচ্ছ হতে যাচ্ছে।
যে ১১টি সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র লাগবে না:
- নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ (সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা এলাকায়)
- সমবায় সমিতির নিবন্ধন
- সাধারণ বীমার সার্ভেয়ারদের নতুন লাইসেন্স
- ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়ন
- চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলীসহ স্বীকৃত পেশাজীবীদের সদস্যপদ
- ৫ লাখ টাকার নিচে পোস্ট অফিস সঞ্চয় হিসাব খোলা
- দশম গ্রেড বা সমমর্যাদার সরকারি কর্মচারীর অর্থ গ্রহণ
- এমপিওভুক্তির মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর
- মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) এর মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ
- স্ট্যাম্প/কোর্ট পেপার ভেন্ডর বা দলিল লেখক লাইসেন্স
- ই-কমার্স ব্যবসার লাইসেন্স (ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা)
যেসব সেবায় এখনও রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র বাধ্যতামূলক:
- ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ
- কোম্পানির পরিচালক/শেয়ারহোল্ডার হতে চাওয়া
- আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন
- ১০ লাখ টাকার বেশি ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন
- পেশাজীবী সদস্যপদের নবায়ন
- সম্পত্তি বিক্রয়, লিজ বা হস্তান্তর
- আবাসিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ
- ১০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বা মেয়াদি আমানত
- উচ্চ পদমর্যাদার চাকরিজীবীদের বেতনভাতা গ্রহণ
- বীমা, পরিবেশ ছাড়পত্র, অস্ত্র/ড্রাগ লাইসেন্স
- বিল অব এন্ট্রি, টেন্ডার ডকুমেন্ট জমা
- হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ক্লিনিক পরিচালনা ও লাইসেন্স
- নির্বাচনে অংশগ্রহণ
- বাড়িভাড়া প্রদান বা গ্রহণ
- ইংরেজি মাধ্যমে স্কুলে ভর্তি
- এনজিও ও ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার বিদেশি অনুদান গ্রহণ
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
যাদের শুধু TIN আছে কিন্তু রিটার্ন জমা দেননি, তাদের জন্য এ সিদ্ধান্ত বিশেষ স্বস্তির বার্তা। তবে যেসব সেবায় এখনও রিটার্ন বাধ্যতামূলক, সেক্ষেত্রে যথারীতি দাখিলপত্র লাগবেই।
Leave a Reply