নতুন দিকে মোড় নিয়েছে ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত। টানা ৯ দিন বিভিন্ন হুমকি-ধমকির পর অবশেষে এ সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘পরম বন্ধু’ ইসরায়েলের ডাকে সাড়া দিয়ে ইরানের বড় তিন পারমাণবিক স্থাপনায় একযোগে ভয়াবহ ক্লাস্টার বোমা হামলা চালিয়েছে দেশটি। ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে পরিচালিত এ অভিযানে ব্যবহার হয়েছে ভয়ংকর বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের এই ক্লাস্টার বোমা হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। একইসঙ্গে এ হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে দাবি দেশটির।
ইরানে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চরমভাবে কটাক্ষ করেছেন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ।
একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে ইরানকে বেশ কিছু দেশ সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করছেন তিনি।
রোববার (২২ জুন) এক টেলিগ্রাম বার্তায় এমন মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ এ সহযোগী।
একইদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আরও একটি পোস্ট করেন দিমিত্রি মেদভেদেভ, যেখানে ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে তিনি লিখেন, নিজেকে ‘শান্তি স্থাপনকারী’ দাবি করা ট্রাম্প একটি নতুন যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রকে।
মূলত, ওই পোস্টে ইরানে হামলা চালিয়ে ওয়াশিংটনের অর্জন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেদভেদেভ। পুতিনের ঘনিষ্ঠ এ কর্মকর্তা বলেন, ইরানের তিন পারমানবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে কী অর্জন করলো আমেরিকানরা? তেমন কোনও ক্ষতিই হয়নি ইরানের ওই পারমানবিক স্থাপনাগুলোর। বরং একটি ‘নতুন যুদ্ধ’ শুরু করলেন ট্রাম্প।
এক্স পোস্টে তিনি আরও লিখেন, ‘এ ধরনের সাফল্যের জন্য এবার নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জনের চিন্তা একেবারে বাদ দিতে পারেন ট্রাম্প। অভিনন্দন, দারুণ এ শুরুর জন্য, মি. প্রেসিডেন্ট।’
প্রসঙ্গত, শনিবার (২২ জুন) রাতে ইরানের বড় তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা—ফর্দো, নাতানঞ্জ এবং ইস্পাহানে হামলা চালায় মার্কিন বোমারু বিমান। পরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইরানে চালানো এ হামলাকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ বলে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ সময় ইরানকে সতর্ক করে ট্রাম্প আরও বলেন, হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য আরও অনেক বড় ট্র্যাজেডি হবে, যা আমরা গত আট দিনে দেখেছি। মনে রাখবেন, এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। আজ রাতটি ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে মারাত্মক। কিন্তু যদি শান্তি দ্রুত না আসে তবে আমরা নির্ভুলতা, দ্রুততা এবং দক্ষতার সাথে অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে যাবো।
Leave a Reply