মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। ঠিক সেই একই রকম আবহে আরও এক নববধূর চাঞ্চল্যকর প্রেমকাহিনি প্রকাশ্যে এসেছে। এ নববধূর হুঙ্কার— আমায় ছুঁয়ে দেখ, ৩৫ টুকরো করে দেব। বাসর রাতেই স্বামীকে এমনই হুমকি দেন নববধূ।
শুধু তাই নয়, বিয়ের পর থেকে প্রতি রাতেই ছুরি হাতে ঘুমাতে যেতেন ওই নববধূ। ফলে প্রাণভয়ে আর সোহাগ করে নববিবাহিত স্ত্রীর কাছে ঘেঁষার সুযোগ পেতেন না স্বামী। শেষে রাতের অন্ধকারে পাঁচিল টপকে প্রেমিকের উদ্দেশ্যে পালালেন ওই নববধূ। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে।
একটি সূত্রের খবর, গত ২৯ এপ্রিল প্রয়াগরাজের এডিএ কলোনি এলাকার ২৬ বছর বয়সের নিষাদ বিয়ে করেছিলেন সিতারাকে। অভিযোগ, বিয়ের বাসর রাতেই স্বামীকে প্রাণনাশের হুমকি দেন তরুণী। ৩০ এপ্রিল শ্বশুরবাড়িতে পা রাখেন সিতারা। ২ মে ধুমধাম করে রিসেপশনের অনুষ্ঠান হয়। যে সময় আত্মীয়রা হইহুল্লোড়ে মেতেছিলেন, সেই সময়ে বন্ধ ঘরের মধ্যে সদ্য বিবাহিত স্ত্রী স্বামীকে ৩৫ টুকরো করার হুমকি দেন।
বর নিষাদ জানিয়েছেন, যখন ঘরে ঢুকলাম, তখন চুপচাপ বসেছিল সিতারা। ঘোমটায় মুখ ঢাকা ছিল। ওর কাছে যেতেই হঠাৎ ঘোমটার আড়াল থেকে ধারালো ছুরি বের করে। তখনই বলে— আমি শুধু আমানের। আমাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করবে না। ছুঁলেই ৩৫ টুকরো করব।
পুরো রাত সোফায় বসে কাটিয়ে দেন নিষাদ। বিছানায় ছুরি হাতেই বসেছিলেন সিতারা। ঘুমাতে সাহস পাননি তিনি। পরপর তিন রাত এমনই ঘটনা ঘটে।
নিষাদ বলেন, জেগে থাকতাম, এই ভয়ে যে ঘুমের মধ্যে যদি সে আমাকে ছুরি মারে। আমি খবরের কাগজে এ ধরনের ঘটনা পড়েছি। ভেবেছিলাম, হয়তো আমিও এবার হেডলাইনে এসে যাব।
তিনি বলেন, এরপর খবরটা আর চেপে রাখতে পারেননি। তিনি পরিবারে বিষয়টি জানান। পরিবারের সামনে সিতারা তার সম্পর্কের কথা কবুল করেন। শুরুতে অশান্তি হলেও দুই পরিবারের তরফে সিতারাকে বোঝানোর চেষ্টা করানো হয়। শেষ পর্যন্ত পরিবারের চাপে শ্বশুরবাড়িতে থেকে গেলেও স্বামীকে ভয় দেখাতে থাকেন তিনি।
নববধূ স্বামীর কাছে অনুরোধও করতে থাকেন, তাকে যেন আমানের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে ৩০ মে রাতে নববধূ সিতারা পালিয়ে যান। অভিযোগ— শ্বশুরবাড়ির পেছনের পাঁচিল টপকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তিনি। সিসিটিভি ফুটেজে সেই ছবি ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে নিষাদের পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নিষাদ জানিয়েছেন, সিতারা তো আমানের কাছে চলে গেল। এখন আমাদের পুলিশের তদন্ত এবং সমাজের অন্তহীন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করবেন। সিতারা ফিরে এলেও তার সঙ্গে আর সংসার করবেন না বলে জানান নিষাদ।
Leave a Reply