‘কুঁড়েঘর’ গানের দলের তরুণ কণ্ঠশিল্পী তাসরিফ খানের বেশ পরিচিতি সোশ্যাল মিডিয়ায়। গানের পাশাপাশি ২০২২ সালে সিলেটের বন্যাদুর্গত বিপর্যস্ত মানুষদের জন্য আর্থিক সহায়তা আহ্বান করে ফেসবুক লাইভ করেন। বন্যার্তদের জন্য তার সহায়তার আহ্বানের ভিডিওটি অল্পতেই ভাইরাল হয়। এরপর কোটি টাকার বেশি অর্থ সহায়তা সংগ্রহ করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসায় ভাসেন এ গায়ক।
এছাড়া বিভিন্ন সময় অসহায় মানুষদের সহায়তায়ও হাত বাড়িয়ে থাকেন এই তারকা। সংগীতের পাশাপাশি মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকা এ মানুষ এবার আলোচনায় এলেন দেশে চলমান কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের নিয়ে কথা বলে। সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা সংস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
চলমান এই ইস্যু নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই এ ব্যাপারে কথা বললেন তাসরিফ খান। রোববার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক স্ট্যাটাসে এ গায়ক লেখেন, ‘ছাত্ররা সম্পূর্ণ যৌক্তিকভাবে তাদের মেধার মূল্যায়ন চায়। এই নূন্যতম চাওয়াটুকু যদি না দেয়া হয়, তাহলে এর থেকে দুর্ভাগ্যের কিছু আর হতে পারে না।’
তাসরিফ খানের এই স্ট্যাটাস নজর কেড়েছে নেটিজেন ও চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থীদের। স্ট্যাটাসটি মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ শতাধিক শেয়ার হয়েছে এবং মন্তব্য এসেছে সাড়ে চার হাজারের বেশি। রিঅ্যাকশন পড়েছে ৬৫ হাজারের বেশি। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলার জন্য মন্তব্যের ঘরে এ গায়ককে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন নেটিজেনরা।
এর আগে গত ৫ জুলাই এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমার চাচা একজন মুক্তিযোদ্ধা (বীর প্রতীক)। যাদের জন্য আমরা স্বাধীন বাংলা পেয়েছি, সেই সব মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান, কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা আমার বা আমাদের সবারই আছে এবং আজীবনই থাকবে। দেখুন, আমাদের দেশে এমনিতেই পড়াশুনা শেষে সব মেধাবীদের চাকরির সুযোগ তুলনামূলক অনেক কম। সেই জায়গায় আমরা যদি আমাদের মেধার সঠিক মূল্য দিতে না পারি, তবে তা হবে আমাদের জন্য চরম দুর্ভাগ্যের।’
‘আমি আমার স্বল্প জ্ঞান থেকে মনে করি, এই সময় চলমান শিক্ষার্থীদের এই কোটা আন্দোলন সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং আমি এর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি। তবে প্রতিবন্ধী এবং আদিবাসী ভাইবোনদের প্রতি আমরা যতটুকু সম্ভব সহনশীল হতে পারি। মন থেকে নিজের ব্যক্তিগত মতামত শেয়ার করার অধিকার নিশ্চই সবার আছে বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে যদি আমার এই মতামত কারো অনুভূতিকে আঘাত করে, তবে দয়া করে আমায় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।’
এছাড়া সবশেষ তিনি লেখেন, ‘আমি একটা কথা স্পষ্ট করে বলছি, “বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে আমি পূর্বেও ছিলাম এখনো আছি এবং সামনেও থাকব, ইনশাআল্লাহ।” প্রিয় শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারা আপনাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছেন হয়তো সামনে আরও করবেন, তবে দয়াকরে খেয়াল রাখবেন কোনোভাবেই যেন জনগণের কোনো ভোগান্তি না হয়।’
Leave a Reply