free tracking

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হলো ইন্টার মায়ামী ও পিএসজির ফুটবল ম্যাচ!

দুই দলের পার্থক্যটা ছিল যোজন যোজন। ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন প্যারিসিয়ান সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) ছিল স্পষ্ট ফেবারিট। তবে প্রতিপক্ষ ইন্টার মায়ামিতে লিওনেল মেসি থাকায় তাদের সমীহ করার কথা জানিয়েছিলেন পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে। কিন্তু মাঠের খেলায় যে কোনো ছাড় নেই। পিএসজির দাপুটে পারফরম্যান্সে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েই ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো মায়ামি।

যদিও আটলান্টার মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়াম আজ (রোববার) রঙিন হয়েছিল স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব মায়ামির গোলাপি রংয়ে। কিন্তু সেই গ্যালারিতে নীরবতা নামতে তেমন সময় লাগেনি। জোয়াও নেভেস-হাকিমিরা একের পর এক গোলে সংখ্যালঘু পিএসজি সমর্থকদের নিয়মিত বিরতিতে উল্লাসে মাতান। শেষ আটে ওঠার পথে তারা মায়ামিকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে।

অবশ্য প্রথমার্ধেই চার গোল দিয়ে নিজেদের কাজ অনেকটা সেরে রেখেছিল পিএসজি। তাদের পক্ষে পর্তুগিজ মিডফিল্ডার নেভেস দুটি, মরক্কান ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমি একটি গোল করেন। আরেকটি গোল ছিল মায়ামির আত্মঘাতী। ম্যাচে ফেরা তো দূরের কথা খুব একটা চ্যালেঞ্জও জানাতে পারেনি মায়ামি। উল্টো মেসির বানানো বলে সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ লুইস সুয়ারেজ। মেসিও বেশ কয়েকবার পিএসজি রক্ষণে হানা দেন, কিন্তু প্রতিবারই আটকে গেছেন নিজের সাবেক ক্লাবটির রক্ষণ দেয়ালে। জোরালো একটি হেড বারে পাঠিয়েছেন অবশ্য, তবে এবার বাধা হয়ে দাঁড়ান জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা।

পুরো ম্যাচে বল দখল থেকে সুযোগ তৈরি সর্বত্রই দাপট ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে আসা পিএসজির। ৬৭ শতাংশ বল দখলে রেখে তারা ১৯টি শট নেয়। এর মধ্যে ৯টি ছিল গোলের লক্ষ্যে। বিপরীতে পজেশনে ব্যাপক পিছিয়ে থাকা মায়ামি ৭টি শটের মধ্যে কেবল ৩টি লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয়।

পিএসজি প্রেসিং ফুটবলের ঝাপটা দিতে শুরু করে তৃতীয় মিনিট থেকেই। খিচা কাভারৎস্খেলিয়ার সেই চেষ্টা সফল না হলেও দুই মিনিট বাদেই ফরাসিরা ম্যাচে লিড নেয়। দারুণ সেট পিসে দুয়ে ও নেভেসকে মায়ামির দুর্বল রক্ষণ ঠেকাতে পারেনি। ফলে নেভেসের হেড সহজেই ঠিকানা খুঁজে নেয়। মিনিট দশেক পর আবারও সেট পিসে গোল, তবে অফসাইডের কারণে ফ্যাবিয়ান রুইজের নাম কাটা পড়ে স্কোরবোর্ড থেকে। তবে মায়ামির ভাগ্য পরিবর্তন হলো না, তারা ফরাসিদের আক্রমণ সামলাতেই ব্যস্ত ছিল পুরোদমে। মেসি সার্জিও বুসকেটসসহ অন্য মিডফিল্ডারদের কাছ থেকেও সেভাবে বলের যোগান পাচ্ছিলেন না।

পিএসজি লিড দ্বিগুণ করে ৩৯তম মিনিটে। ওই সময় থেকে বিরতির আগপর্যন্ত সময়টা ছিল মায়ামির জন্য দুঃস্বপ্নের। যোগ করা সময়সহ ৯ মিনিটের মাঝে ৩ গোল হজম করে এমএলএসের ক্লাবটি। প্রথমে রুইজের বাড়ানো বল ধরে ফাঁকায় দাঁড়ানো নেভেস ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। দিশেহারা মায়ামির ফুটবলার টমাস এভিলেস এরপর ভুল করে আত্মঘাতী গোল করে বসেন ৪৪ মিনিটে। দেজিরে দুয়ে’র ক্রস তার পা ছুঁয়ে মায়ামির জালে জড়ায়।

যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে স্কোরবোর্ড ৪-০ করেন হাকিমি। বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ মায়ামি গোলরক্ষকের কাছ থেকে পিএসজির এই লেফটব্যাক বল পেয়ে যান, এরপর দ্বিতীয় চেষ্টায় তাকে ফাঁকি দিতে আর অসুবিধায় পড়তে হয়নি। বিরতির পর গোল পেতে মরিয়া মায়ামির আক্রমণে ধার বাড়ে। ৬০ মিনিটে মেসির উড়িয়ে মারা পাস কাজে লাগানোর বড় সুযোগ ছিল সুয়ারেজের সামনে। কিন্তু ঠিকঠাক বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি উরুগুইয়ান তারকা। ৮০ মিনিটের মেসির জোরালো হেড সহজেই সামলান দোন্নারুমা।

বিরতির পর উসমান দেম্বেলেলে এই প্রথম চলমান বিশ্বকাপে দেখা গেল। অবশ্য ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা এই ফরাসি তারকা সেভাবে বলার মতো কোন প্রভাব ফেলতে পারেননি। পিএসজি ক্রমাগত আক্রমণ করে গেলেও গোলের দেখা পায়নি আর। তবে বড় জয়ে নিশ্চিত হয়েছে তাদের শেষ আট। যেখানে বায়ার্ন মিউনিখ অথবা ফ্ল্যামেঙ্গোর মুখোমুখি হবে এনরিকের শিষ্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *