free tracking

২০৫০ সালের মধ্যে হারিয়ে যাবে যে দেশ!

প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত ছবির মতো সুন্দর দ্বীপরাষ্ট্র টুভালু এখন জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ হুমকির মুখে। মাত্র ৫ মিটার সর্বোচ্চ উচ্চতার দেশটি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে অস্তিত্ব হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য বিশেষ ‘ক্লাইমেট ভিসা’ পাওয়ার পথ খুলেছে দেশটির নাগরিকদের জন্য।

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের উদ্যোগে টুভালুর নাগরিকরা এখন বিশেষ অভিবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়া চালু করেছে ‘Australian Pacific Immigration Visa’, যার আওতায় ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ২৮০ জন টুভালুবাসীকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। একইভাবে নিউজিল্যান্ড ‘Pacific Access Category Visa’-এর আওতায় প্রতি বছর ৭৫ জনকে গ্রহণ করবে। এই ভিসায় তারা পাবেন বসবাস, চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার পূর্ণ সুবিধা।

টুভালুর প্রধানমন্ত্রী ফেলেতি টেও জানিয়েছেন, দেশের ভেতরে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার মতো জায়গা নেই। প্রতি বছর ১০০ দিনের বেশি সময় দ্বীপে বন্যা দেখা দেয়, যা মানুষের জন্য বসবাসযোগ্য নয়। ফলে আন্তর্জাতিক অভিবাসনই এখন বাস্তব সমাধান। তবে এই সংকটের মধ্যেও টুভালু রাষ্ট্রীয় পরিচয় হারাতে নারাজ। তাই তারা গড়ে তুলছে বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল রাষ্ট্র, যেখানে দেশের প্রশাসন, আইন, ইতিহাস ও সংস্কৃতি অনলাইনে সংরক্ষিত থাকবে।

টুভালুর নাগরিকরা আশ্রয় পেলেও দেশের বড় চিন্তা তাদের জাতিগত পরিচয় ও সাংস্কৃতিক ঐক্য রক্ষা। রাষ্ট্রটি চায়, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেও তারা যেন একটি জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকে। একদিকে অভিবাসনের মাধ্যমে নাগরিকদের বাঁচানো হচ্ছে, অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইও চলছে সমানতালে— উপকূল রক্ষা, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও ভূমি পুনর্গঠনের মাধ্যমে।

এই সংকট শুধু টুভালুর নয়— মালদ্বীপ, কিরিবাস ও মার্শাল আইল্যান্ডসের মতো দেশগুলোর জন্যও এক সতর্ক সংকেত। টুভালুকে সহায়তা দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড যে আন্তর্জাতিক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, তা ভবিষ্যতে জলবায়ু ন্যায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *