free tracking

খুব সহজেই জাল দলিল চেনার উপায়!

জমি কেনার আগে দলিল যাচাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ, ভুয়া এনআইডি, জাল দলিল ও প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। অনেক সময় প্রকৃত মালিকের নাম ব্যবহার করে জালিয়াত চক্র কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়। বিশেষ করে দীর্ঘদিন খাজনা না দেওয়া বা পরিত্যক্ত জমি তাদের প্রধান টার্গেট।

ঢাকার ডেমরার সহকারী ভূমি কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “যে জমির কোনো তদারকি নেই, সেই জমিই বেশি ঝুঁকিতে পড়ে। ভুয়া এনআইডি, জাল দলিল এমনকি নকল পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তৈরি করে জমি বেচাকেনা করে প্রতারক চক্র।”

তবে সচেতন হলে আপনি নিজেই জাল দলিল চিহ্নিত করতে পারেন। নিচে এমন ৯টি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল তুলে ধরা হলো—

১. ভলিউম-রেজিস্ট্রি নম্বর যাচাই করুনসাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষিত রেকর্ড অনুযায়ী দলিলের সাল, ভলিউম ও রেজিস্ট্রি নম্বর মিলিয়ে দেখুন। প্রয়োজনে অফিসে লিখিত দরখাস্ত দিন।

২. স্বাক্ষর ও সরকারি সিল মিলিয়ে নিনদলিলের স্বাক্ষর ও সরকারি সিল প্রামাণ্য কি না যাচাই করুন। সরকারি ছুটির দিনে দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়ে থাকলে, সেটি সন্দেহজনক হতে পারে।

৩. প্রকৃত মালিকের পরিচয় নিশ্চিত করুনএক জমির একাধিক মালিক দেখালে সতর্ক থাকুন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আসল মালিক সম্পর্কে জানুন।

৪. নামজারি ও খতিয়ান পরীক্ষা করুনসহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে খতিয়ান ও নামজারির ধারাবাহিকতা যাচাই করুন। জমির দাগ নম্বর, ঠিকানা, পরিমাণ—সবকিছু মিলে কি না খেয়াল করুন।

৫. আমমোক্তারনামায় ছবি আছে কি না দেখুনযদি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি থাকে, তবে দলিলে উভয় পক্ষের ছবি সংযুক্ত আছে কি না তা নিশ্চিত করুন।

৬. দলিলের তারিখ ও দখল হস্তান্তর মিলিয়ে দেখুনজমি হস্তান্তরের সময় ও দলিলের তারিখ একে অপরের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কি না যাচাই করুন।

৭. দলিল লেখকের তথ্য যাচাই করুনদলিলটি কে তৈরি করেছেন তা জেনে নিন। প্রয়োজনে সরেজমিনে গিয়ে তথ্য মিলিয়ে নিন।

৮. মালিকানা ও পুরনো দলিল যাচাই করুনপুরনো ভায়া দলিলসহ সব ডকুমেন্ট বিক্রেতার কাছ থেকে সংগ্রহ করুন এবং সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যাচাই করুন।

৯. স্ট্যাম্প কোথা থেকে কেনা হয়েছে তা দেখুনদলিল তৈরিতে ব্যবহৃত স্ট্যাম্পের উৎস যাচাই করুন। সিরিয়াল নম্বর দেখে নিশ্চিত হতে পারেন এটি কোথা থেকে কেনা হয়েছে।

জমি কেনার আগে যে সাবধানতাগুলো নেওয়া জরুরিদলিল শুধু দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। ওপরের প্রতিটি দিক ভালোভাবে যাচাই করুন। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ আইনজীবী ও ভূমি অফিসের সহায়তা নিন।

প্রতারিত হলে শুধু টাকা নয়, সময় ও মানসিক শান্তিও হারিয়ে যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *