free tracking

নাভিতে যে তেল দিলেই মিলবে যৌ‘বন!

নাভি—শুধু শরীরের মাঝখানে একটা ছোট গর্ত নয়। আয়ুর্বেদ বলছে, এটি হলো শরীরের শক্তির কেন্দ্রে অবস্থিত এক ‘ম্যাজিক পয়েন্ট’। আর এই নাভিতে যদি প্রতিদিন নয়, অন্তত সপ্তাহে তিনবার কয়েক ফোঁটা তিলের তেল লাগানো যায়, তাহলে শরীর ও মনের এমনসব উপকার হতে পারে—যা অনেক দামি ওষুধেও মেলে না।

বিশেষ করে তিলের তেলকে ঘিরে গত কয়েক বছরে বেড়েছে আগ্রহ। সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এর যে ভূমিকা, তা আজ শুধু আয়ুর্বেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—গৃহস্থ নারীরাও এই উপায় গ্রহণ করে পাচ্ছেন চোখে পড়ার মতো ফল।

চলুন জেনে নিই, ঠিক কীভাবে তিলের তেল আপনার শরীরকে এনে দিতে পারে যৌবনের মতো সতেজতা আর প্রাণ।

১. পিরিয়ডের ব্যথা কমায়

প্রতিমাসেই অসহ্য ব্যথায় ভুগে থাকেন বহু নারী। জরায়ুর পেশি যখন সংকুচিত হয়ে ওঠে, তখন ওই যন্ত্রণাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তিলের তেল। এর উষ্ণ প্রকৃতি ও ম্যাসাজের মাধ্যমে রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে ব্যথা ও খিঁচুনি কমায়। যারা নিয়মিত ব্যবহার করেছেন, তারা জানিয়েছেন—এক-দু’মাসের মধ্যেই অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়।

২. হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে

তিলের তেলে রয়েছে সেসামিন ও সেসামোলিন নামের উপাদান, যা হরমোনের ওঠানামাকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হরমোনের ভারসাম্য থাকলে পিএমএস, মুড সুইং, অতিরিক্ত ক্ষুধা বা বিরক্তি অনেকটাই কমে যায়। এমনকি হরমোনজনিত ব্রণ বা ত্বকের দাগও কমে আসতে শুরু করে।

৩. ঘুমের গুণগত মান বাড়ায়

রাতে ঘুম আসছে না? ঘন ঘন উঠে যাচ্ছেন মাঝরাতে? তাহলে নাভিতে কয়েক ফোঁটা তিলের তেল লাগিয়ে দেখুন। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে আরাম দেয়, মানসিক চাপ কমায় এবং গভীর ঘুম আনতে সাহায্য করে। যারা ঘুমের অভাবে ভুগছেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে এক সহজ ও কার্যকর ঘরোয়া সমাধান।

৪. হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

তিলের তেলের উষ্ণ প্রকৃতি পেট ও অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায়। নাভিতে নিয়মিত এই তেল লাগালে হজমশক্তি বাড়ে, পেট পরিষ্কার হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যায়। বিশেষ করে সকালে যদি পেট ঠিকভাবে পরিষ্কার না হয়, তাহলে এই পদ্ধতি আপনার জন্য কার্যকর হতে পারে।

৫. ত্বকে আনে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা

নাভি দিয়ে শোষিত তেল শরীরের ভেতর প্রবেশ করে কোষগুলোতে পৌঁছে যায়। এর ফলে ত্বক আরও হাইড্রেটেড হয়, ফাটা ঠোঁট মসৃণ হয় এবং ত্বকে আসে এক ধরনের ‘ইনসাইড গ্লো’। শীতকালে যাদের ত্বক বা গোড়ালি খুব রুক্ষ হয়ে যায়, তাদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী।

কীভাবে ব্যবহার করবেন?

রাতে ঘুমানোর আগে পেটের অংশ হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে পরিষ্কার করে নিন।

এক চা চামচ তিলের তেল সামান্য গরম করে নিন।

নাভিতে ৩-৪ ফোঁটা তেল দিন ও আঙুল দিয়ে গোল করে হালকা ম্যাসাজ করুন ২ মিনিট।

চিৎ হয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকুন।

সপ্তাহে তিনবার করলেই যথেষ্ট। পিরিয়ড চলাকালে চাইলে প্রতিদিন করতে পারেন।

কারা ব্যবহার করবেন না?

যাদের তিলজাত তেলে অ্যালার্জি রয়েছে।

যদি নাভিতে কোনও কাটাছেঁড়া বা র‍্যাশ থাকে, তাহলে তা সারার পর ব্যবহার করুন।

গর্ভবতী নারীরা ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বাহ্যিক কসমেটিকস নয়, বরং নাভির মতো গুরুত্বপূর্ণ এক পয়েন্টে কিছুটা তেল লাগানোই হতে পারে আপনার ভেতরের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য চর্চার চাবিকাঠি। তবে এটি কোনো চিকিৎসা নয়—আয়ুর্বেদীয় ও ঘরোয়া এক ঐতিহ্য মাত্র। প্রয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

FAQ (প্রশ্নোত্তর):

প্রশ্ন ১:নাভিতে তেল দিলে কী উপকার হয়?

উত্তর: নাভিতে তেল দিলে ঘুম ভালো হয়, পিরিয়ডের ব্যথা কমে, হজম ভালো হয় এবং ত্বকে উজ্জ্বলতা আসে।

প্রশ্ন ২:নাভিতে কোন তেল ব্যবহার করা ভালো?

উত্তর: আয়ুর্বেদ অনুযায়ী তিলের তেল সবচেয়ে উপকারী, তবে সর্ষের তেল বা ঘিয়েও উপকার হতে পারে।

প্রশ্ন ৩:প্রতিদিন নাভিতে তেল দেওয়া কি নিরাপদ?

উত্তর: হ্যাঁ, যদি আপনার তিলের তেলে অ্যালার্জি না থাকে, তবে প্রতিদিন ব্যবহার নিরাপদ। তবে গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

প্রশ্ন ৪:নাভিতে তেল দিলে ঘুমের সমস্যা কমে কি?

উত্তর: হ্যাঁ, তিলের তেল স্নায়ু শিথিল করে গভীর ঘুম আনতে সাহায্য করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *