শহরের ব্যস্ত রাস্তাঘাটে বা গণপরিবহনে চলাফেরার সময় প্রায়ই দেখা মেলে হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষের। তারা আবদার করে টাকা চান, নাচ-গান করে আয় করেন কিংবা নবজাতকের জন্মে বাড়িতে গিয়ে আশীর্বাদ দেন। তবে সমাজে এখনও এই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অনেকেই ভালো চোখে দেখেন না। অথচ তারা আমাদের মতোই রক্ত-মাংসের মানুষ।
২০১৪ সালে সরকার তাদের আইনগত স্বীকৃতি দিলেও বাস্তবে তারা আজও অবহেলিত, অবাঞ্ছিত। কিন্তু হিন্দু শাস্ত্রে তাদের নিয়ে রয়েছে ভিন্ন একটি দৃষ্টিভঙ্গি—বিশেষত কিছু নিয়ম ও নিষেধ, যা না মানলে জীবনে অশান্তি, অর্থকষ্ট ও দুর্ভাগ্য নেমে আসতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।
জেনে নিন হিজড়াদের তিনটি জিনিস দান করা নিয়ে প্রচলিত সতর্কতা:
১. স্টিলের বাসনঅনেকে দান করার সময় চাল-ডাল বা খাবারপত্র দেওয়ার পাশাপাশি পাত্রটিও দিয়ে দেন। তবে শাস্ত্রে বলা হয়েছে, স্টিলের বাসন হিজড়াদের দিলে সংসারে সুখ-শান্তি হারিয়ে যায়, ঘরে অশান্তি ও কলহ সৃষ্টি হয়। তাই স্টিলের পাত্র হিজড়াদের না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
২. রূপা বা রূপার জিনিসশাস্ত্রে আরও বলা হয়েছে, রূপার তৈরি কোনো জিনিস—হোক সেটা গয়না, পাত্র বা অন্য কিছু—হিজড়াদের দান করলে অর্থসঙ্কট দেখা দেয়। এতে পরিবারের আর্থিক অবনতি ঘটে এবং দারিদ্র্য ঘিরে ধরে। তাই রূপার দান থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
৩. তেলতেল, সেটা সরিষার হোক বা সয়াবিন, কোনো অবস্থাতেই হিজড়াদের দেওয়া উচিত নয় বলে শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। কারণ, তেল দান করলে অর্থ ও সম্মান দুইই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবারের উপর নেমে আসতে পারে সম্মানহানির ঝুঁকি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:এই লেখায় প্রাচীন শাস্ত্রীয় বিশ্বাস ও লোকাচার তুলে ধরা হয়েছে। বাস্তব জীবনে মানবিকতা ও সহানুভূতিই হওয়া উচিত আমাদের মূল দৃষ্টিভঙ্গি। প্রত্যেক মানুষ, যেই লিঙ্গ বা পরিচয়েরই হোক না কেন, সমান সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রাখে।
Leave a Reply