free tracking

কোলেস্টেরল নয়, হার্ট অ্যাটাকের আসল কারণ জানালেন ডাক্তার!

আজকাল আমরা প্রায়ই শুনি—অল্প বয়সেই কেউ হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারালেন। এমন ঘটনা শুধু বড়দের নয়, ৩০ বা ৪০-এর কোটার মধ্যেই হার্টের অসুখ দেখা দিচ্ছে। বিষয়টা ভয়ের, কিন্তু বোঝা দরকার আসলে সমস্যা কোথায়?

হার্টের অসুখ কি কেবল কোলেস্টেরলের জন্য? না কি অন্য কিছু লুকিয়ে আছে এর পেছনে?

এই প্রশ্নের জবাব দিলেন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জয় ভোজরাজ। তিনি বলছেন, “সমস্যা শুধু কোলেস্টেরল বেশি থাকলেই হয় না, আসল বিপদ হচ্ছে শরীরে ঘুরে বেড়ানো সেই ক্ষতিগ্রস্ত এলডিএল কণাগুলি।”

তাহলে এলডিএল-ই বা কী?
আমরা জানি, কোলেস্টেরলের দুই রকম রূপ আছে—ভালো (HDL) আর খারাপ (LDL)।
LDL-এর কাজ শরীরের কোষে চর্বি সরবরাহ করা, কিন্তু যখন এই কণাগুলো অক্সিডাইজড বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়, তখনই শরীরের ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় হয় এবং ধমনিতে প্রদাহ শুরু হয়।

এই প্রদাহই ধীরে ধীরে প্লাক তৈরি করে, যার ফলে ধমনি সরু হয়ে যায় এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ডা. ভোজরাজ সহজ কথায় বুঝিয়েছেন, “আপনার শরীরে কতটা কোলেস্টেরল আছে সেটা বড় কথা নয়—এই কণাগুলো কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

আপনার হৃদয় সুস্থ রাখতে কোন কোন পরীক্ষা করাবেন?
আমরা প্রায়শই মনে করি, বছরে একবার ECG করালেই সব ঠিক। কিন্তু ডা. রাজীব বসিষ্ঠ বলছেন, এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি ধরাই পড়ে না। তাঁর মতে, বছরে একবার অন্তত নিচের পরীক্ষাগুলি করা উচিত:

✅ লিপিড প্রোফাইল (কোলেস্টেরলের ব্যালান্স বোঝার জন্য)
✅ রক্তে চিনির মাত্রা (ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আছে কিনা দেখার জন্য)
✅ রক্তচাপ ও BMI পরিমাপ
✅ কোমরের মাপ – অতিরিক্ত চর্বি হার্টের বড় শত্রু
✅ ইকোকার্ডিওগ্রাম বা স্ট্রেস টেস্ট – যাদের বুক ধড়ফড়ানি, ক্লান্তি বা পরিবারে হার্টের ইতিহাস আছে

তবে সবকিছুর চাবিকাঠি — আপনার জীবনযাপনই!
হার্ট ভালো রাখতে আপনার জিমে যাওয়ার দরকার নেই, বরং প্রয়োজন প্রতিদিন কিছু ছোট ছোট ভালো অভ্যাস। যেমন:

নিয়মিত হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
রাতের ঘুম ঠিক রাখা
স্ট্রেস কমানো
ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল এড়ানো
ডা. ভোজরাজ বলেন, “জীবনটা বড় করতে হলে আপনাকে শরীরের কথা শুনতেই হবে। হৃদয় ভালো থাকলে তবেই বাকি সবকিছু সম্ভব।”

মনে রাখবেন: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র তথ্য জানার জন্য। কোনও শারীরিক সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *