আপনার কি হঠাৎ কোমরের নিচে বা পিঠের পাশে অসহ্য ব্যথা অনুভূত হয়? কখনো কি মনে হয় পেটের ভিতর কিছু ছুরি দিয়ে খোঁচা দিচ্ছে? এমন ব্যথা অনেক সময় গ্যাস ভেবে উপেক্ষা করেন অনেকে, কিন্তু এটি হতে পারে কিডনিতে পাথর বা কিডনি স্টোনের প্রথম সতর্ক সংকেত। কিডনি স্টোনের ব্যথা ও গ্যাসের ব্যথার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য জানা থাকলে আপনি নিজেই প্রাথমিকভাবে চিনে নিতে পারবেন বিপদের সম্ভাবনা।
ব্যথার ধরন বলছে অনেক কিছুকিডনি স্টোনের ব্যথা হঠাৎ শুরু হয় এবং হয় অত্যন্ত তীব্র ও ধারালো। অনেকেই একে ছুরি দিয়ে কেটে ফেলার মতো যন্ত্রণাদায়ক বলে বর্ণনা করেন। এই ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে সঙ্গে বমি বমি ভাব, এমনকি বমিও হতে পারে। অন্যদিকে, গ্যাসের ব্যথা বা পিঠে টান ধরা ব্যথা সাধারণত মৃদু, অব্যাহত এবং শরীরের পজিশন অনুযায়ী বাড়ে বা কমে।
ব্যথার অবস্থান ও গতিকিডনির পাথরের ব্যথা সাধারণত শুরু হয় পাঁজরের নিচ থেকে, পাশে এবং তারপর তলপেট বা যৌনাঙ্গের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে। এটি এক জায়গায় স্থির থাকে না। কিন্তু পিঠের ব্যথা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানে অনুভূত হয়। গ্যাসের ব্যথা মূলত পেটের ভেতরে বা উপরের পেটে হয় এবং সময় বা হজমের অবস্থান অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন করে।
অতিরিক্ত উপসর্গ? মনোযোগ দিন!কিডনি স্টোন থাকলে প্রস্রাবে রক্ত, ঘোলা ভাব, ব্যথাসহ প্রস্রাব করা, এমনকি জ্বর-ঠাণ্ডা লাগার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। গ্যাস হলে পেট ফেঁপে থাকা, ঢেঁকুর ওঠা ও গ্যাস বের হলে আরাম পাওয়ার মতো সাধারণ লক্ষণ থাকে। পিঠে টান ধরলে শরীর নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে বা কমে।
চলাফেরার প্রতিক্রিয়া কেমন?গ্যাস বা পিঠের ব্যথা হাঁটাচলা বা অবস্থান বদলালে অনেক সময় উপশম হয়। কিন্তু কিডনি স্টোনের ব্যথায় এই উপশম হয় না, বরং রোগী অস্থিরভাবে ঘুরে বেড়ালেও তেমন স্বস্তি পান না। ব্যথা হয় ধারাবাহিক, গভীর এবং যন্ত্রণাদায়ক।
বিশেষজ্ঞ পরামর্শ: এমন ব্যথা বারবার হলে বা উপরের উপসর্গগুলোর কোনোটা দেখা দিলে গ্যাস বলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজন হলে আল্ট্রাসনোগ্রাফি বা ইউরিন টেস্ট করান। কিডনি স্টোন ধরা পড়লে শুরুতেই চিকিৎসা নিলে জটিলতা কমে।
সতর্ক থাকুন, নিজের শরীরের বার্তা শুনুন। গ্যাস না পাথর—জানুন সঠিক ব্যথার পরিচয়, আর নিন সময়মতো ব্যবস্থা।
Leave a Reply