চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ার প্রেক্ষিতে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের জন্য আরেকটি পরীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদরা। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ফায়দার জন্য ফলাফল ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানোর প্রবণতা শিক্ষার মানের অবনতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবার ১৯ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার ৬৮.৪৫ শতাংশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, “তিন মাস মেয়াদে আরেকটি প্রোগ্রাম হাতে নিয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য পুনরায় পরীক্ষা আয়োজন কঠিন কিছু নয়।” তিনি জানান, অতীতে সহজ প্রশ্ন, নমনীয় মূল্যায়ন, এমনকি প্রশ্নফাঁসের মতো ঘটনায় রাজনীতিকরা ভালো ফলাফলকে ব্যবহার করেছে।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকে পাসের হার ধারাবাহিকভাবে ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে এই ‘বাম্পার ফলনের’ কোনো ইতিবাচক প্রতিফলন দেখা যায়নি। অনেক জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় টিকছে না।
শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এই ফলাফল প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা বলেন, “যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কর্মসংস্থানের জায়গা না থাকে, তাহলে অহেতুক সবাইকে পাস করিয়ে কোনো লাভ নেই।”
অঞ্চলভেদে শিক্ষার মানোন্নয়নে পৃথক পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন শিক্ষাবিদরা। তারা মনে করেন, এখনই সময় বাস্তবসম্মত, মানসম্মত ও দীর্ঘমেয়াদী শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের।
Leave a Reply