পিঠ বা কোমরের ব্যথা নিয়ে নাজেহাল আট থেকে আশি। চেয়ারে টানা বসে কাজে পিঠের পেছন দিকে ব্যথা বাড়ছে। সেই সঙ্গেই গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা থাকলেও পিঠের পেছন দিকে বা তলপেটের যন্ত্রণা যখন তখন কাবু করে দেয়। এই ধরনের ব্যথাকে বলে ‘লোয়ার ব্যাক পেন’।
ব্যথা হলে বেশির ভাগই ভেবে নেন যে, দীর্ঘ সময় বসে থাকার জন্য ব্যথা হচ্ছে অথবা গ্যাসের সমস্যা ভোগাচ্ছে। কিন্তু নেপথ্যের কারণ অন্যও হতে পারে। পিঠের নীচের দিকের ব্যথা যদি মাঝেমধ্যেই ভোগায়, যখন তখন ব্যথা শুরু হয়, তা হলে সাবধান হতে হবে। এই ব্যথার কারণ কিডনি স্টোনও হতে পারে।
কিডনিতে পাথর জমতে শুরু করলে তার লক্ষণ সব সময় প্রকাশ পায় না। অনেকেই ভাবেন, কিডনির সমস্যা মানেই প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা বা যন্ত্রণা হবে। শুরুতে তা না-ও হতে পারে। প্রথম উপসর্গ হতে পারে পিঠের নীচের দিকে বা তলপেটে যন্ত্রণা।
আবার গ্যাসের সমস্যা হলেও এমন ব্যথা হয়। কাজেই ব্যথার ধরন দেখে রোগের উপসর্গ চিনে নিতে হবে।
কিডনিতে পাথর জমার ব্যথা
কিডনিতে পাথর জমতে থাকলে ব্যথা হবে পিঠের এক পাশে, পাঁজরের ঠিক নীচে এবং কোমরের কিছুটা উপরের দিকে। ব্যথা তীব্র হবে, মাঝেমধ্যেই ভোগাবে। পাথর মূত্রনালি দিয়ে নীচে নামলে ব্যথা ধীরে ধীরে তলপেটে ছড়িয়ে পড়বে।
কুঁচকিতেও ব্যথা শুরু হবে।
ব্যথা এক বার শুরু হলে তা সহজে কমবে না। ব্যথানাশক ওষুধ খেলেও আরাম হবে না। শরীরে অস্থিরতা, প্রদাহ বাড়বে। এই ব্যথা হয় বাঁ দিক বা ডান দিক, যেকোনা এক দিকেই একটানা হতে থাকবে। সাধারণত দুদিকে ব্যথা একই সঙ্গে হবে না।
আনুষঙ্গিক আরও কিছু লক্ষণ দেখা দেবে, যেমন— বমি ভাব, প্রস্রাবের সময়ে জ্বালা, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসবে কিন্তু খুব প্রস্রাব হবে না, বারে বারে জ্বর আসতে পারে, ক্লান্তি বেড়ে যাবে। প্রস্রাবের রং বদলে যাবে, গোলাপি, লাল বা গাঢ় হলুদ বর্ণের প্রস্রাব হতে পারে। অনেক সময়ে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তও বেরোতে পারে।
গ্যাসের ব্যথা
বদহজম হলে বা ক্রনিক গ্যাসের ব্যথা ভোগালে তা পেটের উপরের দিকে ও পাঁজরের নীচে হবে। পিঠের দিকেও ব্যথা হয়, তবে তা একটানা হবে না। বুকের মাঝখানেও ব্যথা হতে পারে, সেই সঙ্গে চোঁয়া ঢেকুর, বুকজ্বালা, অম্বল হবে। পেট ফাঁপা, পেট ভার হয়ে থাকার মতো লক্ষণ দেখা দেবে। ব্যথা কখনও কম, আবার কখনও তীব্র হবে। ব্যথা পিঠের উপরের দিকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, কাঁধেও ব্যথা হবে। গ্যাসের ব্যথার সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলিয়ে ফেলেন অনেকেই।
Leave a Reply