সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এলো এক বিরাট সুখবর। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। এই ঐতিহাসিক রায়ের ফলে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুটি করে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির পথ সুগম হলো, যা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ও আইনি লড়াইয়ের ফল।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ১৮ পৃষ্ঠার এই গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রকাশ করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। রিটকারীদের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ২০০৯ সাল থেকে নিয়োগ পাওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২০১৫ সালের পে-স্কেল অনুযায়ী দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন বলে রায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, এই বৃহৎ সংখ্যক সরকারি কর্মীর উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তিতে আর কোনো আইনি বাধা রইল না।
এই রায়ের প্রেক্ষাপট দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের ফসল। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল আপিল বিভাগ রায় দিয়েছিলেন যে, সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে যারা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন, তারাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন অর্থ মন্ত্রণালয় সরকারি চাকরিজীবীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে। সংক্ষুব্ধ চাকরিজীবীদের এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সেই আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছিল, সরকারি কর্মচারীদের প্রদত্ত এসব আর্থিক সুবিধা কোনোক্রমেই ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরের আগে দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে এই পরিপত্রের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেই সংক্ষুব্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা রিট দায়ের করেছিলেন, যার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি আজ আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে হলো।
আপিল বিভাগের এই পূর্ণাঙ্গ রায়ের ফলে সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা দূর হতে চলেছে। এটি কেবল আর্থিক সুবিধা নয়, বরং তাদের পদোন্নতি ও কর্মজীবনের স্থিতিশীলতার জন্যও একটি ইতিবাচক দিক। এই রায় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে এবং তাদের কর্মস্পৃহা বাড়াতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দেশের প্রশাসনিক কার্যক্রমেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
Leave a Reply