১৬ জুলাই ২০২৫ — এক অস্থির বিকেল, গোপালগঞ্জ যেন পরিণত হয়েছিল উত্তপ্ত এক যুদ্ধক্ষেত্রে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে ঘিরে শহরের রাজপথে শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হলেও, শেষ পর্যন্ত তা গড়ায় সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ এবং আতঙ্কে ভরা এক রক্তাক্ত অধ্যায়ে।
আসিফ মাহমুদের ফেসবুক পোস্টে সর্বশেষ তথ্য3 আসিফ মাহমুদ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে জানান, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এনসিপি নেতাকর্মীদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়। তিনি লিখেন,
“এনসিপি নেতাকর্মীদের রেসকিউ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
এই বক্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই বলছেন—এই যদি হয় গণতন্ত্রের বাস্তব চিত্র, তবে ভবিষ্যৎ রাজনীতির কী পরিণতি?
হামলার বিবরণ: মিছিল থেকে তাণ্ডবে রূপান্তরবিকেল ২টার দিকে গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে অনুষ্ঠিত হয় এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় প্রতিনিধি ও গণতন্ত্রকামী সাধারণ জনগণ। কিন্তু হঠাৎ করেই একদল মুখোশধারী ব্যক্তি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মঞ্চে উঠে হামলা চালায়। ঘটে ককটেল বিস্ফোরণ, শুরু হয় চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি ও ভাঙচুর।
এরপর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে, যখন গোপালগঞ্জ সদর, দুর্গাপুর ইউনিয়ন এবং ইউএনও’র গাড়িবহরেও হামলার খবর পাওয়া যায়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়, এমনকি একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে উদ্ধারহামলার মাত্রা বাড়তে থাকলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। তারা এনসিপি চেয়ারম্যান হাসনাত আব্দুল্লাহসহ শীর্ষ নেতাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। পাশাপাশি পুরো গোপালগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
দলের প্রতিক্রিয়া ও জাতীয় প্রতিধ্বনিএনসিপি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে,
“গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার নামে নয়, এই হামলা বাংলাদেশের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। সরকারকে বলবো, দোষীদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।”
এদিকে, বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিক সমাজ থেকেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এসেছে। তাদের মতে, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দমন করতে গিয়ে সরকার নিজেই গণতান্ত্রিক চর্চার বিরোধিতা করছে।
Leave a Reply